‘নিজের গহনা বিক্রি করেও নেতাকর্মীদের টাকা দিতেন মা’

‘নিজের গহনা বিক্রি করেও নেতাকর্মীদের টাকা দিতেন মা’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর মায়ের স্মৃতিচারণ করে বলেছেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে বাবার পাশে ছিলেন মা। তিনি সংসারটা করতেন গুছিয়ে। প্রতিটি কাজে নিয়ম মেনে চলতেন। কোনো সময় তাঁর মধ্যে হতাশা দেখিনি।

বিজ্ঞাপনকোনো জিনিস ফুরিয়ে গেলে তিনি নাই বলতেন না। বলতেন, আনতে হবে। আর মা ছিলেন বাবার ছায়াসঙ্গী। বাবার আদর্শ তিনি ধারণ করেছিলেন। প্রতিটি কাজে বাবাকে সহযোগিতা করেছেন। এ কারণে নিজের পড়াশোনাটাও ঠিকমতো করতে পারেননি।

আজ সোমবার (৮ আগস্ট) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয় তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার বাবা টাকা এনে মায়ের হাতে তুলে দিতেন। মা এই টাকা সংসারের জন্য খরচ করতেন। নেতাকর্মীদের জন্য বিনা দ্বিধায় খরচ করতেন। অনেক সময় নিজের গহনা বিক্রি করেও নেতাকর্মীদের জন্য টাকা দিয়েছেন। কোনো জিনিসের প্রতি তার এমন কোনো আকাঙ্ক্ষা ছিল না যে, এটা আমার চাই।

তিনি বলেন, বাবা বারবার কারাগারে যেতেন। কারাগারে দেখতে গেলে বাবা জিজ্ঞেস করতেন, সংসার কীভাবে চালাচ্ছো। মা বলতেন, এটা নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না। এটা আমার ওপর ছেড়ে দাও। কখনও বাবাকে সংসারের ব্যাপারে চিন্তাই করতে দেননি। বলতেন, আমি সব দেখব, তোমার এটা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। যেহেতু বাবা রাজনীতি করেন, তিনি জানতেন দেশের মানুষের অধিকার নিয়ে বাবা কাজ করছেন। এজন্য তাঁকে ফ্রি করে দিতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও মায়ের পরামর্শ বাবার ওপর ভূমিকা রেখেছে। ছয় দফা থেকে আট দফা হয়ে গেলে কিন্তু আন্দোলন সফল হতো না। এক্ষেত্রে মায়ের ভূমিকা আছে। শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের মতো একজন আদর্শ সহধর্মিণী পাওয়া বঙ্গবন্ধুর সৌভাগ্য ছিল।

অনুষ্ঠানে রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা সমাজসেবা এবং স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পাঁচ বিশিষ্ট নারীকে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত সর্বোচ্চ জাতীয় পদক ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব’ পদক দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পদক তুলে দেন অনুষ্ঠানের সভাপতি মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।  পুরস্কার হিসেবে ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের ৪০ গ্রাম ওজনের পদক, সম্মাননাপত্র এবং ৪ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়।

যে পাঁচ বিশিষ্ট নারী ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক-২০২২’ পেয়েছেন তাঁরা হলেন, ‘রাজনীতির ক্ষেত্রে সৈয়দা জেবুন্নেছা হক (সিলেট), অর্থনীতিতে সেলিমা আহমাদ এমপি (কুমিল্লা), শিক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপচার্য অধ্যাপক নাসরীন আহমাদ, সমাজসেবা ক্ষেত্রে মোছা. আছিয়া আলম (কিশোরগঞ্জ) এবং স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ ক্ষেত্রে গোপালগঞ্জ জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা আশালতা বৈদ্য (মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার)।

Leave a Reply

Your email address will not be published.