পূর্ণশক্তির বাংলাদেশকে হারাল খর্বশক্তির জিম্বাবুয়ে

পূর্ণশক্তির বাংলাদেশকে হারাল খর্বশক্তির জিম্বাবুয়ে

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা ১৯ ওয়ানডে অজেয় থাকার পর অবশেষে হারের মুখ দেখল বাংলাদেশ। ওয়ানডের শক্তিশালী দল বাংলাদেশকে ৫ উইকেটে হারিয়ে তাক লাগিয়ে দিল। তা-ও আবার ৩০৩ রান তাড়া করে। শুধু সাকিব ছাড়া পূর্ণশক্তির বাংলাদেশ আজ মাঠে নেমেছে।

অন্যদিকে জিম্বাবুয়ে ইনজুরিতে ছিটকে গেছেন অধিনায়ক এবং সেরা ব্যাটার ক্রেইগ আরভিন। চোটের কারণেই দলে নেই সেরা পেসার ব্লেসিং মুজারাবানি এবং অলরাউন্ডার শন উইলিয়ামস। এসব সমস্যা যেন আজ পাত্তাই পেল না সিকান্দার রাজা এবং ইনোসেন্ট কাইয়ার কাছে।

বিশাল রান তাড়ায় নেমে শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়ে জিম্বাবুয়ে। দুই পেসার মুস্তাফিজুর রহমান আর শরীফুল ইসলামের সৌজন্যে ৬ রানে পতন হয়  ২ উইকেটের। রেজিস চাকাভাকে (২) বোল্ড করে শুরুটা করে মুস্তাফিজ। এরপর শরীফুলের বলে মোসাদ্দেকের তালুবন্দি হন তারিশাই মুশকান্দা (৪)। দ্রুত দুই উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলানোর চেষ্টা শুরু করেন ইনোসেন্ট কাইয়া এবং ওয়েসলি মাধভেরে। দুজনে গড়েন ৪২ রানের জুটি। ডাবলস নিতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হয়ে যান মাধভেরে (১৯)।

উইকেটে আসেন অল-রাউন্ডার সিকান্দার রাজা। একপ্রান্ত আগলে রাখা ইনোসেন্ট কাইয়া ৬৬ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি। ব্যক্তিগত ৪৩ রানে তাসকিনের বলে ক্যাচ দিয়েও তাইজুলের কল্যাণে বেঁচে যান রাজা। এরপর মুস্তাফিজুর রহমানকে মিড অফ দিয়ে উড়িয়ে ৫৭ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের ২১তম ফিফটি। দুজনের জুটি এক শ ছাড়িয়ে তরতর করে এগোতে থাকে। ৩৩ ওভারের শেষ বলে কাইয়ার ফিরতি ক্যাচ নিতে গিয়ে চোট পান শরীফুল। তাকে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়তে হয়!

এরপর জিম্বাবুয়ের দুই ব্যাটার তুলে নেন সেঞ্চুরি। মাত্র ৮১ বলে সেঞ্চুরি করেন সিকান্দার রাজা।  এর পরপরই ইনোসেন্ট কাইয়া সেঞ্চুরি তুলে নেন ১১৫ বলে। তাদের চতুর্থ উইকেট জুটিতে আসে ১৭২ বলে ১৯২ রান। মোসাদ্দেকের বলে ১২২ বলে ১১০ রান করা কাইয়া আউট হলে ভাঙে এই জুটি। দুর্দান্ত সিকান্দার রাজার সঙ্গী হন লুকি জঙ্গুই। দুজনের ৪২ রানের জুটিতে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে যায় জিম্বাবুয়ে। ১৮ বলে ২৪ রান করে আউট হন জঙ্গুই। জয়ের জন্য তখন প্রয়োজন ১৭ বলে ৮ রান। বাকি কাজটা সারেন ১০৯ বলে অপরাজিত ১৩৫ রানের ইনিংস খেলা সিকান্দার রাজা। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে বিশাল এক ছক্কা মেরে ১০ বল হাতে রেখেই দলকে তিনি জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন।  

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ২ উইকেটে ৩০৩ রানের বড় স্কোর গড়ে বাংলাদেশ। ফিফটি করেন প্রথম চার ব্যাটার। এর মাঝে লিটন কুমার দাস ক্যারিয়ারের ৭ম সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু পেশিতে টান লাগায় ৮১* রানে অপরাজিত থেকেই তাকে স্ট্রেচারে শুয়ে মাঠ ছাড়তে হয়। সতর্ক শুরুর পর রানের গতি বাড়ান তামিম ইকবাল আর লিটন। সিকান্দার রাজার বলে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেওয়ার আগে তামিম করেন ৮৮ বলে ৯ চারে ৬২ রান। এই ইনিংস দিয়েই তিনি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডেতে ৮ হাজার রানের মাইলফলক পেরিয়ে যান।

বাংলাদেশের ওপেনিং জুটিতে আসে ১১৯ রান। এরপর আরো দুই ব্যাটার পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলেছেন। তাদের মাঝে চমকে দিয়েছেন এনামুল হক বিজয়। তিন বছর পর ওয়ানডে দলে ফিরেই খেলেছেন ৬২ বলে ৬ চার ৩ ছক্কায় ৭৩ রানের চমৎকার ইনিংস। মিল্টন শুম্বাকে ডাউন দ্য উইকেটে ছক্কা মেরে ফিফটি পূরণ করেছেন  ৪৮ বলে। এরপর দেখান আগ্রাসী ব্যাটিং। ইনিংসের শেষ দিকে ফিফটি করেন মুশফিকুর রহিম। তিনি ৪৮ বলে ফিফটি করার পর ৫২* রানে অপরাজিত থাকেন। মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত থাকেন ২০* রানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.