স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর :: গাজীপুরের শ্রীপুরে এক গৃহবধূকে গলাকেটে হত্যার পর ফ্ল্যাটে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছেন তার স্বামী। হত্যার পর গৃহবধূর বাবাকে কল করে অভিযুক্ত স্বামী বলেন, ‘আপনার মেয়েকে মেরে ফেরছি, লাশ নিয়ে যান।’ আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার কপাটিয়াপাড়া এলাকায় হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। নিহত গৃহবধূর নাম নাদিরা আক্তার (২৬)। তিনি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার ঝিকাতলা মাইজহাটি গ্রামের আমিনুল ইসলামের স্ত্রী।
নাদিরা আক্তারের বাবার বাড়িও একই এলাকায়। আমিনুল স্ত্রীকে নিয়ে শ্রীপুর উপজেলার কপাটিয়াপাড়া এলাকার কামরুজ্জামানের দোতলা একটি বাড়ির নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থেকে পাশে স্টিলমার্ক কারখানায় চাকরি করতেন। হত্যায় অভিযুক্ত আমিনুল ইসলাম (৪০) ঘটনার পর থেকে পলাতক। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা দা জব্দ করা হয়েছে।
নাদিরার ছোট ভাই রাজিব মিয়া বলেন, ‘ওই বাড়ির দোতলার একটি ফ্ল্যাটে তিনিও ভাড়া থেকে পাশে একটি কারখানায় চাকরি করেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে তাঁর কর্মস্থল যাওয়ার পথে নাদিরার ফ্ল্যাটটি বাইরে থেকে তালাবদ্ধ দেখেন।
নাদিরার বাবা নজরুল ইসলাম জানান, সকাল ১১টার দিকে নাদিরার স্বামী তাকে ফোন করে বলেন, ‘আপনার মেয়েকে মেরে ফেলছি, লাশ নিয়ে যান।’ এই কথা বলেই ফোনের লাইন কেটে দেন আমিনুল। এরপর বারবার তাকে (আমিনুল) কল করলেও ফোনটি বন্ধ পান তিনি। পরে ঘটনাটি তার ছেলেকে জানিয়ে তিনিও সেখানে যান। ওই বাড়িতে গিয়ে ফ্ল্যাটের বাইরে থেকে দরজায় তালা ঝুলতে দেখেন। পরে তার ছেলেসহ প্রতিবেশীদের নিয়ে তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে মেঝেতে নাদিরার গলাকাটা মরদেহ দেখতে পান।
নজরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার নিষ্পাপ মেয়েকে গলাকেটে হত্যার পর দরজায় তালা দিয়ে আমিনুল পালিয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, আমাকে কল করে আমার মেয়েকে মেরে ফেলার কথাও জানিয়েছে।’
নিহত নাদিরার ছোট ভাই রাজিব মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘আমিনুল এর আগেও বিয়ে করেছিলেন। ওই স্ত্রীকেও হত্যা করেছেন আমিনুল। ওইসব তথ্য গোপন করে আমার বড় বোনকে বিয়ে করেছিলেন।’
মাওনা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. হাসমত উল্লাহ বলেন, ‘নাদিরাকে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে। মরদেহের পাশ থেকে একটি রক্তমাখা দা জব্দ করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে।’ শ্রীপুর থানার ওসি মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে আমিনুল পলাতক। তাকে ধরার চেষ্টা চলছে।’
Discussion about this post