গাজীপুর প্রতিনিধি:- গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় রায়েদ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বাগেরহাটের গ্রামের মৃত নুরুল ইসলাম ওরফে নুর মোহাম্মদের পুত্র যুবলীগ কর্মী, ভূমি দস্যু,মামলাবাজ, আন্তজেলা চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য মামুন (৩৫) ও তার ভাই সাব্বিরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। আত্নীয় স্বজনসহ এলাকার মানুষের জমি জবর দখলের চেষ্টা, বাধা প্রদান, গাছ কেটে নেওয়া, মামলা দিয়ে হয়রানি করা যেন থামছেই না মামুনগংদের। আ’লীগের সাবেক এমপি পরিবারের আশীর্বাদপুষ্ট গ্রামে একটি পরিবারের ছত্র ছায়ায় মামুনের অত্যাচার দিশেহারা এলাকার সাধারণ মানুষ। মামুন ও তার ভাই সাব্বিরের ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারছে না ভোক্তভোগি মানুষ গুলো। সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, উপজেলায় রায়েদ ইউনিয়নের বাগেরহাট গ্রামে সরকারি রাস্তা দখল করে সিমেন্টের খুটি গেড়ে প্লাস্টি নেটের বেড়া দিয়ে সাধারণ মানুষের চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন মামুন। রেকর্ডিয় কাগজপত্রে দেখা যায়, বাগেরহাট মৌজায় আর.এস রেকর্ড ও ম্যাপে ৫৭৯ নং দাগের সম্পত্তি সরকারি রাস্তা হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। মামুন সরকারি রাস্তার পাশে একটি জমি ক্রয় করে সেই জমির সাথে সরকারি রাস্তা বন্ধ করে গাছ লাগিয়ে রেখেছে। রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পরেছেন এলাকার সাধারণ মানুষ। তার ক্রয়কৃত জমির আরেক পাশ দিয়ে ৩০ বছরের অধিককাল যাবত আরেকটি রাস্তার জমিসহ দখল নিয়ে নেটের বেড়া দিয়ে রেখেছে। মামুনের আপন চাচাত ভাই রেকর্ডিয় মালিক চাঁন মিয়ার পুত্র আশরাফুল বলেন, মামুন আমাদের জমি জোর পূর্বক দখল করে রেখেছে। ৫০ বছরের পুরনো আমাদের বাবার ভিটা দখলের চেষ্টা করেছে অনেকবার। মামুনগং আমাদের উপর একাধিক বার হামলা করে আবার নিজেরা একাধিক মামলা দিয়ে দিনের পর দিন আমাদেরকে হয়রানি করতেছে । মামুনদের মামলা হামলার ভয়ে আতংকের মধ্যে দিন কাটাইতেছি আমরা। মামুনদের করা ফৌজধারী ৬৪৬/১৪ মামালাসহ দুইটা মামলায় রায় পাইছি। আরো মামলা চলমান আছে। এছাড়াও মামুন আন্তজেলা চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। বিগত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে ময়মনসিংহের পাগলা থানার ২০/১৭৬ নং মামলায় চোরাই মালামালসহ গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন কারাভোগ করে জামিনে আছে। বর্তমানে মামলাটি ময়মনসিংহ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-১ এ চলমান রয়েছে। আদালতে চলমান মামলা নং ১৭৬/২২। অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাগেরহাট গ্রামের আরেক ভোক্তভোগি আক্কাস আলী নুরুল ইসলামের কাছ থেকে বিগত ১৮/১/২০০০ তারিখে ৩৯৫নং সাফ কবলা দলিল রেজিস্ট্রি করিয়া ২৪.৫০ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। জমির মূল্য বেড়ে যাওয়ায় আক্কাস আলীকে অন্য দাগ খতিয়ানে জমি নিতে বলে। আক্কাস আলী তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মামুনগং মিলে আক্কাস আলীর জমি জোড় পূর্বক দখল নিতে বাশের বেড়া ভেঙ্গে জমিতে প্রবেশ করে বাশ, গাছসহ প্রায় ৬৭ হাজার টাকার ক্ষয়-ক্ষতি করে। মামুন ও তার বাবা-মা, ভাই একাধিক বার দখল করতে চেয়েছে এখনো দখলের চেষ্টা করে যাচ্ছে জানা যায়। পরে আক্কাস আলী ন্যায় বিচারের স্বার্থে বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিঃ আদালত, গাজীপুরে সি.আর-২৪৫/১৩ নং মামলা করেন। আক্কাস আলী, আশরাফুলসহ এমন একাধিক পরিবার রয়েছে যারা মামুনগংদের অত্যাচারে অসহায়ের মতো দিন কাঠাচ্ছে। জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক ব্যক্তি বলেন, তার বাবা মালিকানার চেয়ে বেশি সম্পত্তি মানুষের নিকট বিক্রয় করে গেছে, এখন তার চাচাত ভাই বোনদের জমিসহ আশপাশের মানুষের জমি জোর পূর্বক দখল করে রেখেছে। মানুষের জমিতে বাধা, গাছ কেটে নিয়ে যায়, মানুষকে একের পর এক হামলা মামলা করে যাচ্ছে। সে তার বাবার বেচা জমি অস্বীকার করে মানুষকে বাধা দেয়। তার নামে ইউনিয়ন পরিষদে ও থানায় একাধিক অভিযোগ দেওয়া হলেও টাকার জোর ও সাবেক এমপি পরিবারের আশীর্বাদপুষ্ট একটি পরিবারের ছত্র-ছায়ায় আগে কিছুই হয়নি, এখন এলাকার বিএনপির এক নেতার ছত্র-ছায়ায় অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের দ্বারা আশে পাশের মানুষ প্রতিদিনেই নির্যাতিত হইতেছে বলে দাবি করেন একাধিক এলাকাবসী। এ বিষয়ে অভিযুক্ত মামুনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
Discussion about this post