আল আমিন, নাটোর প্রতিনিধি:- নাটোরের বাগাতিপাড়ায় ৫২ বছর বয়সে চলতি এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন দুলু। ১৯৯০ সালে প্রাথমিক ও জুনিয়র পরিক্ষায় বৃত্তি লাভের পর বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় বসেছিলেন। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসের শিকার হয়ে সেবার বহিস্কার হন। এরপর বন্ধ হয়ে যায় তার পড়ালেখা। অনাকাঙ্খিত সেই ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন ইউপি সদস্য দুলু। এরপর স্থানীয় নির্বাচনে ইউপি সদস্য হিসাবে জয়ী হওয়ায় আবারও পড়ালেখা করার মনোবল ফিরে পান। অবশেষে চলতি এসএসসি পরীক্ষায় বসেছেন ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন দুলু। দুলু জানান, তার পরিবারের সকলেই শিক্ষিত। শুধু তিনিই কম শিক্ষিত হওয়ায় প্রতিনিয়তই মনকষ্ট তাকে কুরেকুরে খাচ্ছিল। ২০২১ সালে বাগাতিপাড়া উপজেলার জামনগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৩ নম্বর করমদোশী ওয়ার্ডের মেম্বার নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি নতুন করে লেখাপড়া করার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর তিনি পার্শ্ববর্তী রাজশাহী জেলার চারঘাট উপজেলার উমরগাড়ী দারুল খায়ের দ্বি-মুখি দাখিল মাদ্রাসায় নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। এবার তিনি এসএসসি দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। তিনি আরও জানান, ছোটবেলা থেকেই ভালো ছাত্র ছিলেন তিনি। ১৯৮৫ সালে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে প্রাথমিক বৃত্তি এবং ১৯৮৮ সালে জামনগর দ্বি-মুখি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণিতে জুনিয়র বৃত্তি লাভ করেন। ১৯৯০ সালে বাগাতিপাড়া কেন্দ্রে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পর্রীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু তৎকালীন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহরাব হোসেন তাকে বহিস্কার করেন। অনাকাঙ্খিত ঘটনায় তার স্বপ্ন ভেঙ্গে গেলও নতুনকরে স্বপ্ন দেখে তার বাস্তবে রুপ দিতেই অংশ নিয়েছেন এবারের পরীক্ষায়। দুলু তার জন্য সকলের কাছে দেয়াও চেয়েছেন। জামনগর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম রাব্বানী দুলুর পরীক্ষা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এই বয়সে চক্ষু লজ্জা উপেক্ষা করে দুলু যে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে সেজন্য তাকে সাধুবাদ জানাই। আসলে পড়লেখার কোন বয়স নাই তারই উৎকৃস্ট উদাহরণ দুলু।
Discussion about this post