ঝিনাইদহ বিশেষ প্রতিনিধি মোঃ ফজলুল কবির গামা :: তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসনের যাত্রা শুরু হয়। তার আগে এটি যশোর-১ আসনের অন্তভূক্ত ছিল। ঝিনাইদহ-১ আসনে এখন পর্যন্ত সংসদ সদস্য পেয়েছেন ৫ জন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগের কামরুজ্জমান, আব্দুল হাই, নায়েব আলী জোয়ার্দ্দার, বিএনপির আব্দুল ওহাব, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের দবিরুদ্দিন জোয়ারদার। এরপর ১৯৯১ সালের ৫ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ১৯৯৬ সালের ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও একই সালের তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন বিএনপির আব্দুল ওহাব। ১৯৯১-২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করেন। শৈলকুপার উন্নয়নের কথা বলতে গেলে অধিকাংশই বিএনপির ওহাবের আমলে। তিনিই একমাত্র বিএনপি থেকে জনগণের সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিএনপি আমলের সরকার দলীয় ও বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য হিসাবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছিলেন । তার আমলে অনুন্নত শৈলকুপা উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়। শিক্ষা, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ বহুমুখী উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে তার অবদান ভুলবার নই। জানা যায়, বিএনপির এক সমাবেশে ভাগ্য পরিবর্তন হয় শৈলকুপার। ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর শৈলকুপার পৌরসভা ও পৌরভবন নির্মাণ করে ওহাব। সেটি উদ্বোধন করতে তিনি আমন্ত্রণ জানান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে। পৌরভবন উদ্বোধনের পৌর শৈলকুপা কলেজ মাঠে বিএনপির এক সমাবেশ হয়৷ সেখানে বেগম খালেদা জিয়াসহ সেসময়ের বিএনপি সরকারে ২৪ জনের অধিক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রায় পাঁচ লক্ষের মত লোকের সমাগম হয় এ সমাবেশে। সমাবেশে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিকট শৈলকুপা কলেজ সরকারীকরণ, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ, হাসপাতালে নতুন ভবন নির্মান, একাধিক ব্রীজ সড়ক নির্মাণ ও সংস্কারের দাবিসহ শৈলকুপার উন্নয়নের নানা দাবি তুলে ধরেন ওহাব। সে সমাবেশের পরে পর্যায়ক্রমে দাবিগুলো বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখেন বেগম খালেদা জিয়া। শৈলকুপার উন্নয়নে এমপি আব্দুল ওহাবের ভূমিকার জবাব নেই। শৈলকুপার জন্য তার মতো মানুষের বিকল্প নেই। তিনি ১৯৯১ সালের ১০ বছর আগে থেকেই এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের আহ্বায়কের ভূমিকা পালন করেন। ওই কার্যক্রমের ভিত্তিতে ১৯৯১ সালে বিএনপি থেকে তিনি প্রথম নমিনেশন পান। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার, ভার প্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, আনুমানিক ২০-২২ জন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী শৈলকুপাতে জনসভা করেন এবং প্রত্যেকটিতে সভাপতিত্ব করেন আব্দুল ওহাব। এই সভার কারণে শৈলকূপা তে তিন থেকে চার কোটি টাকার ব্যায়ে নয়টি ব্রিজ নির্মাণ হয়। নয়টি নতুন ডিগ্রী কলেজ নির্মিত হয়। শৈলকুপার সদরে একমাত্র ডিগ্রী কলেজটি সরকারিকরণে সক্ষম হন আব্দুল ওহাব। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়া মহোদয়ের নির্দেশে খুলনা বিভাগের প্রথম ফায়ার স্টেশন শৈলকুপায় নির্মিত হয়। শৈলকুপার হাসপাতালের উন্নতি করেন আব্দুল ওহাব। তিনি হাসপাতাল আধুনীকিকরণের মাধ্যমে হাসপাতালে অনেক উন্নতি সাধন করেন। যেখানে যেখানে বিদ্যুৎ ছিল না সেখানে বিদ্যুৎ প্রদানের ব্যবস্থা করেন। তিনি নতুন 50 টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ ও কয়েকটি উচ্চ বিদ্যালয় নির্মাণ করেছেন। প্রত্যেকটি তিনি নিজে উদ্বোধন করেছেন। তিনি এমপি থাকাকালীন শৈলকুপার যে উন্নতি হয়েছে তার বিকল্প নেই। তার মতো এমপি পাওয়া সত্যি ভাগ্যের ব্যাপার। তিনি শৈলকুপার যেরকম উন্নয়ন করেছেন তা আগের আনুমানিক ৫০ বছরেও কেউ করতে পারেনি। তিনি অতিরিক্ত জনদরদী একজন ব্যক্তি। রাত দিন 24 ঘন্টায় যদি কখনো কারোও বিপদ হয়েছে সে তৎক্ষণাৎ সেখানে ছুটে গেছে। তার মতো সৎ ও ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া খুবই মুশকিল। তিনি অত্যন্ত দুর্লভ প্রকৃতির মানুষ। তাই, যদি শৈলকুপার এমপি হিসেবে তিনি আবারও নির্বাচিত হন তবে তিনি শৈলকুপাকে উন্নয়নের শীর্ষে নিয়ে যাবে বলে আশা করা যায়। তাই বলা যায়, শৈলকুপার হয়ে যদি কেউ সংসদ সদস্যের দায়িত্ব পালন করে তাহলে সেটি আব্দুল ওহাব সাহেবেরই প্রাপ্য বলে জনগণ জানিয়েছেন।
Discussion about this post