বিশেষ প্রতিবেদক : বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী চিনিকল কেরু এ্যান্ড কোম্পানী (বাংলাদেশ) লিমিটেড। এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠেছে চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা নামক স্থানে ১৯৩৮ সালে। এখানে রয়েছে দেশীয় মদের গোডাউন ৯টি, যার ধারণ ক্ষমতা ৮৬৩৭৩.০০বিজি। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে দেশী মদ বিক্রিয়ের জন্য ১৩টি পণ্যাগার আছে। পণ্যাগারগুলো হলো – ১. পারবর্তীপুর মাদকদ্রব্য পন্যাগার, দিনাজপুর ২. কুমিল্লা মাদকদ্রব্য পন্যাগার, কুমিলা ৩. চট্টগ্রাম মাদকদ্রব্য পন্যাগার, চট্টগ্রাম ৪. ময়মনসিংহ মাদকদ্রব্য পন্যাগার, ময়মনসিংহ ৫. শ্রীমঙ্গল মাদকদ্রব্য পন্যাগার, মৌলভীবাজার ৬. ঢাকা মাদকদ্রব্য পন্যাগার, ঢাকা ৭. ফরিদপুর মাদকদ্রব্য পন্যাগার, ফরিদপুর ৮. যশোর মাদকদ্রব্য পন্যাগার, যশোর ৯. খুলনা মাদকদ্রব্য পন্যাগার, খুলনা ১০. বরিশাল মাদকদ্রব্য পন্যাগার, বরিশাল ১১. দর্শনা মাদকদ্রব্য পন্যাগার, চুয়াডাঙ্গা। ১২. পাবনা মাদকদ্রব্য পন্যাগার, পাবনা ১৩. কান্তাহার মাদকদ্রব্য পন্যাগার, বগুড়া।
এছাড়া বিলাতী মদ বিক্রয়ের জন্য ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিক্রয় কেন্দ্র আছে। বিলেতীমদ বিক্রয় কেন্দ্র সমূহ – দর্শনা বিক্রয় অফিস, ঢাকা বিক্রয় অফিস, চট্টগ্রাম বিক্রয় অফিস, কক্সবাজার বিক্রয় অফিস। চুয়াডাঙ্গা দর্শনা মাদকদ্রব্য পন্যাগারের অন্তুর্ভুক্ত দেশীয় মদ বিক্রির জন্য চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া সহ আশপাশের কয়েকটি জেলায় দেশীয় মদ সরবরাহ হয়ে থাকে দর্শনা মাদকদ্রব্য পন্যাগার থেকে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, দর্শনা মাদ্রকদ্রব্য পন্যাগারের অন্তর্ভূক্ত চুয়াডাঙ্গা দেশীয় মদের দোকানের বিক্রয় সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে। এর কারণ উৎঘাটনে জানতে পারে অবৈধ্য পথে চুয়াডাঙ্গা নিচের বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে দেশীয় মদ বিক্রেতারা গোপন পন্থায় অজ্ঞাত ব্যক্তি নিকট থেকে অবৈধ্য সুবিধা দিয়ে ‘র’ মাল নিয়ে এসে বিক্রি করছে।
অপরদিকে, চুয়াডাঙ্গা জেলাব্যাপি কিছু অসাধু ব্যবসায়ীগণ কেরু এ্যান্ড কোম্পানী (বাংলাদেশ) লিমিটেডের দেশীয় মদ বোতলজাত করে খোলা বাজারে গোপনের বিক্রি করছে বলে জানা গেছে। চুয়াডাঙ্গা শহর, ডিঙ্গেদহ, সরোজগঞ্জ সহ জেলার বিভিন্ন স্থানে ঔষধ দোকান, হোমিওপ্যাথিক ফার্মেসী, মুদিখানার দোকান, জেলা বিভিন্ন স্থানে হরিজন সম্প্রদায় মাঝে ৯০% অ্যালকোহল জাতীয় হোমিওপ্যাথিক বোতলে মোড়ানো ঔষধ বিক্রি করছে নেশাজাতীয় মদ হিসেবে। যা খেলে একজন মদ পানকারী মারা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উদ্ধারকৃত মাদকের গায়ের লেবেলে লেখা আছে হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন, অ্যাকলোহল ৯০% ভি/ভি, ড্রাগ মেনুফ্যাক্সার লাইসেন্স নং-এইচ-০৬১, ডি.এ.আর নং- এইচ-৭২-এ-০-৫, ব্যাচ নং-০৫, মেনুফ্যাক্সার তারিখ- ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এক্সপাইয়ার তারিখ-ফেব্রুয়ারি ২০২৮, সেবা হোমিও ল্যাবরেটরী, গাজীপুর, বাংলাদেশ। এই হোমিওপ্যাথিক ঔষধ মদ সেবনকারীগণ দেদাচ্ছে কোন ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়েই নেশা জন্য পান করছে। এতে যে কোন সময় চুয়াডাঙ্গা জেলার বড় ধরনের দুর্ঘটনার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। তার জন্য প্রশাসনিক পদক্ষেপ জরুরী হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে মেহেরপুর জেলার গাংনী বাজারে মেহেরপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, পুলিশ, সেনাবাহিনী সদস্যরা মঙ্গলবার অভিযান চালিয়ে ১১৪৪ বোতল অ্যালকোহল জাতীয় ঔষধসহ নিলুফা ইয়াসমিন (৪৪) নামে একজন ফার্মেসী মালিককে আটক করেছে। তিনি দীর্ঘদিন যাবত মদ সেবনকারীদের মাঝে বিক্রি করে আসছিলেন। চুয়াডাঙ্গা জেলাবাসীর দাবি, ভেজাল অ্যালকোহল বা হোমিওপ্যাথিক ঔষধ তৈরির কাজে অ্যালকোহল মদপানকারীগণ নেশার জন্য ব্যবহার করে যেকোন সময় মৃত্যুর মুখে পতিত হতে পারে।
এ ব্যাপারে জরুরীভিত্তিতে জেলা প্রশাসক, চুয়াডাঙ্গা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, জেলা পুলিশ প্রশাসন ও সেনাবাহিনী পদক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়েছে। কোথায় কোথায় এই অ্যালকোহল পাওয়া যাচ্ছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
Discussion about this post