নিজস্ব প্রতিবেদক :: টঙ্গীতে অনুষ্ঠিত ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমায় হামলার হুমকি দেওয়ায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় নাট্যজন ও দেশ নাটকের কর্ণধার এহসানুল আজিজ বাবুকে দুই দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। তাকে মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের হাউজিং সোসাইটি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর মেট্রো থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইন-২০০৯-এ করা একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার করে জিএমপির গোয়েন্দা পুলিশ।
সূত্র জানায়, গ্রেফতারের পর বুধবার তাকে গাজীপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে হাজির করে আরও তথ্যপ্রমাণ উদঘাটনের জন্য পুলিশ তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। শুনানি শেষে বিচারক ইকবাল হোসেন আদালতে উপস্থাপিত তথ্য প্রমাণাদি বিবেচনায় নিয়ে তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারিতে সমাপ্ত হওয়া তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমার সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ইজতেমায় হামলার হুমকি দিয়ে একটি পোস্ট দেওয়া হয়। এ ঘটনা তখন লাখ লাখ মুসল্লির মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি সাইবার টিমের সহযোগিতায় হুমকিদাতা আলামিন হোসেন (৩৩) নামে এক যুবলীগ কর্মীকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মহানগরীর শিমুলতলী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। পরে আসামি পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দেয়। তার স্বীকারোক্তি ও প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সদর মেট্রো থানার এসআই মাসুদ আনোয়ার আকন্দ বাদী হয়ে সদর মেট্রো থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইন-২০০৯-এ একটি মামলা করেন। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে পুলিশ রনি সরকার, সাইফুর রহমান শাওন, সিয়াম হোসেনকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে গ্রেফতারদের দেওয়া তথ্য, তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন পরীক্ষা করে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এহসানুল আজিজ বাবুকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের হাউজিং সোসাইটি এলাকা থেকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করা হয়।
জানা গেছে, এই রনি সরকার আসামি আলামিনের সহযোগী। ফেসবুকে তাদের একটি গ্রুপ আছে, যে গ্রুপের অ্যাডমিন ও নিরাপত্তা সেটিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন আসামি আলামিন। এই গ্রুপের সদস্যরা এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন সাইবার অপরাধে জড়িত। গ্রুপগুলো বিশ্লেষণ করে আলামিন হোসেনকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে রনি সরকারকে গ্রেফতার করা হয়। যিনি কিনা বিভিন্ন সময়ে অর্থের বিনিময়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে সহায়তা করতেন। আলামিন হোসেন ও অন্য আসামিরা অনলাইন গ্রুপগুলো পরিচালনা করে বিভিন্ন রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকালাপ করারও নির্দেশনা দেয়। আলামিন নিজেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উস্কানিমূলক ভিডিও বার্তা প্রচার করেন।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) তাহেরুল হক চৌহান যুগান্তরকে বলেন, গ্রেফতার আসামিদের ব্যবহৃত বিভিন্ন মোবাইল ফোন ও তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ধারাবাহিকভাবে অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার ও পলাতক আসামিরা রাষ্ট্রবিরোধী ও জননিরাপত্তার জন্য হুমকিমূলক বিভিন্ন কাজে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে।
Discussion about this post