আল আমিন, নাটোর প্রতিনিধি:- নাটোরে আদালত চত্তরে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত পুলিশ সুপার এস এম ফজলুল হকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। নাটোর প্রেসক্লাব, ইউনাইটেড প্রেসক্লাব ও ইউনিক প্রেসক্লাবের সিনিয়র সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে মারপিটের শিকার গণমাধ্যম কর্মীদের পক্ষে নাটোর প্রেসক্লাবের সদস্য কাউছার হাবীব এ অভিযোগটি দায়ের করেন। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১.৪৫ মিনিটে নাটোর প্রেসক্লাবের সদস্য কাউছার হাবীব বাদী হয়ে নাটোর সদর থানায় অভিযোগটি দায়ের করেন। নাটোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহাবুব রহমান অভিযোগ দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। অভিযোগে বলা হয়, মঙ্গলবার দুপুরে স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় ময়মনসিংহ রেঞ্জে সংযুক্ত বরখাস্তকৃত পুলিশ সুপার এস এম ফজলুল হক নাটোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজিরা দিতে আসেন।পরে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আদালত থেকে কারাগারে নেওয়ার সময় সাংবাদিকরা ভিডিও ধারণ ও ছবি তুলতে গেলে পুলিশের কাছ থেকে ছুটে এসে আসামি ফজলুল হক সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেন এবং ক্যামেরা ভাঙচুরের চেষ্টা চালান। এ ঘটনায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে তাকে কারাগারে নেওয়া হয়।এ ঘটনায় বরখাস্তকৃত পুলিশ সুপার ফজলুল হকসহ দায়িত্বে অবহেলা করা পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে সাংবাদিক কাউসার হাবীব সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, বরখাস্ত এসপি ফজলুল হকের হুমকি অনুসারর তাঁর লোকজন যে কোন সময় নাটোরের সাংবাদিকদের উপর হামলা করতে পারেন। অভিযোগ দিতে এসে ইউনাইটেড প্রেসক্লাবের সভাপতি নাসিম উদ্দীন নাসিম ও নাটোর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান বলেন, বরখাস্তকৃত পুলিশ সুপারকে হাতকড়া না পরিয়ে দায়িত্বে অবহেলার পাশাপাশি বিশেষ সুবিধা দেওয়া পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে কঠোর কর্মসূচির দেয়া হবে। এ সময় অনান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাটোর প্রেসক্লাবের সভাপতি ফারাজি আহমদ রফিক বাবন, ইউনিক প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল আহমেদ, ইউনাইটেড প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী সুফি সান্টু, সিনিয়র সাংবাদিক জুলফিকার হায়দর জোসেফ, হালিম খান, আল- মামুন, বুলবুল আহমেদ, মাহবুব হোসেন, সাংবাদিক কাউসার আলী, গোলাম রাব্বানী, মামুন খান, ইউসুফ আলী, সদর থানার ওসি মাহাবুর রহমান জানান, সাময়িক বরখাস্ত পুলিশ সুপার এস এম ফজলুল হকের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগটি গ্রহণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, পুলিশের বরখাস্ত কর্মকর্তা (পুলিশ সুপার) এস এম ফজলুল হক গত ১১ মার্চ নাটোর আদালত চত্বরে কর্মরত বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের চিত্র সাংবাদিকদের শারীরিক লাঞ্ছিত করেছেন। স্ত্রী মেহনাজ আকতার আমিনের দায়ের করা নারী নির্যাতনের একটি মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে হাজিরা দিতে এসেছিলেন এসপি ফজলুল হক। এজলাস থেকে জেল হাজতে নেয়ার সময় ফজলুল হকের হাতে ছিলো না কোন হাতকড়া। এই সুযোগে তিনি চড়াও হন গণমাধ্যমকর্মীদের উপর।
Discussion about this post