আল আমিন, নাটোর প্রতিনিধি :- নাটোরের লালপুরে পদ্মানদীর চরাঞ্চলে তিনযুগ পর আবারো পরীক্ষামূলকভাবে ঢেমশি চাষ শুরু হয়েছে। তুলনামূলক কম খরচ ও স্বল্প সময়ে ফলন দেওয়ায় ঢেমশি নতুন করে আশা জাগাচ্ছে। এরই মধ্যে বিলুপ্তপ্রায় এই ফসলের আবাদ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি বিভাগ। উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, নব্বইয়ের দশক বা তারও পূর্বে এঅঞ্চলে ঢেমশির চাষ হতো। চলতি বছরে উপজেলার বিলমাড়িয়া পদ্মার চরে ৩০ শতক জমিতে ঢেমশি চাষ হচ্ছে। এটি ব্যাপক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এবং বহুমাত্রিক দানাদার খাদ্য হিসেবে পরিচিত। এ থেকে চাল, গমের মতো আটা তৈরি হয়, আবার ঢেমশি ফুল থেকে উন্নতমানের মধুও সংগ্রহ করা সম্ভব। ফুল আসার আগে ঢেমশির পাতা শাক হিসেবে খাওয়া যায়। এছাড়া প্রতিবছর কার্তিক থেকে অগ্রহায়ণ মাসে ঢেমশির বীজ রোপন করে তিন মাসের মধ্যে ফলন পাওয়া যায়। ঢেমশি চাষে কম পরিমাণে সার বা কীটনাশক ব্যবহৃত হয়। এতে খরচও কম আবার ফসলটি উচ্চপুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। সরেজমিনে দেখা যায়, পদ্মা নদীর চরে ধানের জমির পাশে ধনিয়ার ফুলের ন্যায় ফুল ফুটেছে।সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে বাতাসে দোল খাচ্ছে ঢেমশির সাদা রঙের ফুল। এসময় কথা হয় ঢেমশি চাষি মুনতাজ আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে ৩০ শতাংশ জমিতে ঢেমশি চাষ করেছি। এবার ভালো ফুল এসেছে, আশা করছি ফলনও ভালো হবে। এতে প্রায় ৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।বাজারে এখন প্রতি মণ ঢেমশি ৬-৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে বিক্রি করলে প্রায় ২৫ হাজার টাকার মত লাভ হবে। তবে এবার বিক্রি না করে আটা তৈরি করবো। তিনি আরো বলেন, আমার ঢেমশি চাষ দেখে অনেকেই ঢেমশি চাষের জন্য আমার থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন। আমি নিজেও আগামী মৌসুমে আরো বেশি পরিমাণ জমিতে আবাদ করবো। এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় বলেন, এবছর পরীক্ষামূলক ভাবে ঢেমশি চাষ শুরু হয়েছে। কৃষক কম খরচে বেশি লাভবান হলে ভবিষ্যতে ঢেমশি চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে। এক্ষেত্রে আমরাও বিলুপ্ত প্রায় ফসলটি সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছি। ঢেমশি চাল, আটা এবং মধু উৎপন্ন করে ঢেমশির বাজার সৃষ্টি করতে পারলে এটি আমাদের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
Discussion about this post