বিশেষ প্রতিনিধিঃ।। স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের আমলে ময়মনসিংহ জেলায় জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকার টেন্ডার দুর্নীতি,রাজনৈতিক প্রভাব, ঘুষ বাণিজ্য,পার্সেন্টিজ বাণিজ্য সহ নানা অপকর্মের দায়ে সম্প্রতি ২০২১ সালে ময়মনসিংহ থেকে শেরপুরে বদলি হয় জনস্বাস্হ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ছামিউল হকের।
এমন কোন অপকর্ম নেই যা তিনি ময়মনসিংহে দায়িত্বে থাকা কালীন করেননি । সমালোচিত নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ছামিউল হকের বিরুদ্ধে, একের পর এক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে কিন্তু কোন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কারণ ক্ষমতায় তো আওয়ামী লীগ! বিলের চেক আটকে ঘুষ আদায় করা, প্রাপ্ত কাজের অনুকূলে অনাপত্তিপত্র প্রদানে ঘুষ নেওয়া, চুক্তিপত্র ও বিলের ফাইল আটকে ঘুষ আদায় এবং বিভিন্ন ভাবে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেওয়ায় অতিষ্ঠ একাধিক ঠিকাদার ও অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। নির্বাহী প্রকৌশলীর এই ঘুষ-দুর্নীতির ঘটনা ওপেন সিকরেট হলেও প্রকল্প জটিলতার ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাননি কোনো মহল।
একাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অভিযোগ- বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ পরিশোধের জন্য,অনেক চেক নিজের কব্জায় নিয়ে ঠিকাদারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতেন ছামিউল হক । যে ঠিকাদার তাকে অতিরিক্ত অর্থ দিতে সক্ষম হয়েছে তাকে চাহিদামতো বিল পরিশোধ করেছেন তিনি। এছাড়াও বিল পরিশোধের সময় বিশেষ জামানতের অজুহাত দিয়ে প্রায় অনেক ঠিকাদারের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেন তিনি।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ- নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ছামিউল হক ৫-৭ পারসেন্ট অর্থের বিনিময়ে দরপত্রের গোপন রেট পছন্দের ঠিকাদারকে দিয়ে কাজ বাগিয়ে নিতে সহায়তা করেন। এছাড়া টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর প্রাপ্ত ঠিকাদারকে নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড দিতে এক থেকে দেড় পারসেন্ট নেন তিনি। কোনো ঠিকাদার অতিরিক্ত টাকা দিতে আপত্তি জানালে প্রকল্প বাস্তবায়নে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে কৌশলে অর্থ হাতিয়ে নেন তিনি। এছাড়া বিলের ক্ষেত্রে তিন পারসেন্ট দিতে হবে বলে অলিখিত একটি আদেশ জারি করেন তিনি। ফাইলের সঙ্গে টাকা না দিলে দিনের পর দিন ফাইল আটকে রাখেন। তার কাজে সহায়তা করেন সিন্ডিকেট সদস্যরা । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার বলেন- টেন্ডার কমিটি, টেন্ডার যাচাই-বাছাই সহ দরপত্র প্রক্রিয়ায়,রাজনৈতিক প্রভাব,ঘুষ বানিজ্য, স্বজন প্রীতি ও দুর্নীতির আশ্রয় নেন তিনি।
সূত্রমতে, আওয়ামী নেতাদের নিয়ে জেলা জুড়ে নির্মাণ ও মেরামত প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম করে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে কোটি কোটি টাকা!
তিনি দায়িত্বে থাকা কালীন সংশ্লিষ্ট অর্থ বছরে মেরামত ও নির্মাণ প্রকল্পে নিম্নমানের কাজ করে ব্যাপক সমালোচিত হন নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ছামিউল হক। তাছাড়া সে সময়ে গণমাধ্যমের ভাইরাল বিষয় ছিল এটি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, আওয়ামী দোসর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল আউয়াল এখনো বহাল তবিয়তে থেকে, নিজেই শেল্টার দিচ্ছেন দূর্নীতিবাজ, বিতর্কিত প্রকৌশলী ছামিউল হককে! জানা গেছে, ছামিউল শেরপুর থেকে পুনরায় ময়মনসিংহে বদলির খবরে, চরম হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন নির্বাহী প্রকৌশলী ছামিউল হক।
তবে দুর্নীতিবাজ কতিপয় এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান সচেতন ময়মনসিংহ বাসী।
Discussion about this post