নিজস্ব প্রতিবেদক :: উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরও মুক্তি না দেওয়ার প্রতিবাদে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের ফটকের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করার পর মুক্তি পেয়েছেন সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় বন্দী মাওলানা মুহিবুল্লাহ। আজ মঙ্গলবার বিকেল সোয়া চারটার দিকে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। এর আগে বেলা ১১টা থেকে জামিন পাওয়ার পরও মাওলানা মুহিবুল্লাহকে মুক্তি না দেওয়ার প্রতিবাদে ‘বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দোলন’-এর ব্যানারে কারা ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছিলেন একদল ব্যক্তি। মাওলানা মহিবুল্লাহ ভোলা সদর থানার চরসিফলি গ্রামের আবদুর রব মাস্টারের ছেলে।
আন্দোলনকারীরা জানান, ভোলার একটি মাদ্রাসার জনপ্রিয় শিক্ষক মাওলানা মুহিবুল্লাহ। তিনি ২০২৩ সালের ২৩ মার্চ বিলাইছড়ি থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় গ্রেপ্তার হন। ওই মামলায় গত ৩০ জানুয়ারি হাইকোর্ট থেকে তিনি জামিন পান। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে ডেমরা ও বিলাইছড়ি থানায় আরও দুটি মামলা ছিল। ওই দুই মামলায় আগেই তিনি জামিন পেয়েছেন। জামিনের কাগজপত্র চার দিন আগে কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছায়। এরপরও কারা কর্তৃপক্ষ তাঁকে মুক্তি না দিয়ে আটকে রাখে। এ জন্য তাঁর মুক্তির দাবিতে তাঁরা আন্দোলন করছেন।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ চলাকালে প্রিজন ভ্যান, অ্যাম্বুলেন্স, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও প্রবেশে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটে। আন্দোলনকারীরা কারা ফটকের সামনে পলিথিন বিছিয়ে জোহরের নামাজও আদায় করেন। একপর্যায়ে বিকেল চারটার দিকে মাওলানা মুহিবুল্লাহকে মুক্তি দেয় কারা কর্তৃপক্ষ।
মুক্তির পর মাওলানা মুহিবুল্লাহ আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্য অভিযোগ করেন, ‘কারাগারের সাবেক জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা তাঁকে নানাভাবে নির্যাতন করেছে। তাঁকে নাকি রাখা হয়েছিল আমাদের নির্যাতন করার জন্য। এত কিছুর পরও তাঁকে বদলি করা হয়েছে, সেটি কি যথেষ্ট? তাঁকে চাকরিচ্যুত করে তাঁর বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
কর্মসূচিতে ‘বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন বলেন, ‘জামিনের কাগজপত্র কারাগারে পৌঁছানোর পরে ২৪ ঘণ্টার বেশি আটকে রাখার সুযোগ নেই। মাওলানা মহিবুল্লাহকে নিয়েই আমরা বাড়ি ফিরেছি। আমাদের আন্দোলনের মুখে পৌনে চারটার দিকে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের নিয়মের মধ্যে থেকেই কাজ করতে হয়। জামিনের কাগজ পাওয়ার পর তা যাচাই-বাছাই করে বিকেল পৌনে চারটার দিকে তাঁকে (মাওলানা মুহিবুল্লাহ) ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
Discussion about this post