স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর:: গাজীপুর মহানগরের পূবাইলে মা সপ্না খাতুনের পরকিয়ার বলি হলেন তার ঔরসজাত বড়ছেলে সোলেমান হোসেন সম্রাট (১৭)। অবৈধ পরকিয়ায় বাধা দিতে গিয়ে মায়ের পরামর্শে পরকিয়া প্রেমিক আমির আলীর হাতে প্রাণ দিত হলো ছেলে সোলেমান হোসেন সম্রাটকে। নিহত সম্রাট উত্তরার আবদুল্লাহপুরে একটি অনলাইন সপে কাজ করতো। এবিষয়ে শনিবার সম্রাটের ফুফা টিপু সুলতান বাদী হয়ে পূবাইল থানায় একটি হত্যা মামলা করলে পূবাইল থানার ওসি শেখ আমিরুল ইসলাম পূবাইল থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে পরকিয়ার প্রেমিকযুগল সপ্না খাতুন ও আমির আলীকে আটক করতে সক্ষম হন।
অন্যদিকে শনিবার সকাল ১১টায় সম্রাটের ডুবন্ত মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করেছে পরকিয়ার জড়িত আমিরের বাড়ির পাশের সুলতানের পুকুর থেকে। ঘটনার ১২ ঘন্টার মধ্যে পরকিয়া ও হত্যায় জড়িত সপ্না ও আমিরকে আটক করলেন পূবাইল থানা পুলিশ। রোববার সকাল ১১টায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের(জিএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার, অপরাধ (দক্ষিণ) এন এম নাসিরুদ্দিন প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। আটক সপ্না খাতুন গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানার নিয়ামতের বাইগুনি গ্রামের আব্দুল হামিদ প্রামাণিকের মেয়ে।বর্তমানে পূবাইল থানার ৪০নং ওয়ার্ডের কুদাব এলাকায় রিনার বাসার ভাড়াটিয়া। স্থানীয় আমির আলী পূবাইল থানার ৪২ নং ওয়ার্ডের সাতপোয়া এলাকার মোঃ জামির উদ্দিনের ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দুই সন্তানের জননী সপ্না খাতুনের বখাটে স্বামী জাকির হোসেনের সাথে দীর্ঘদিন যাবত তার বনিবনা হচ্ছিলো না। সেই সুযোগে স্থানীয় আমির আলীর সঙ্গে অবৈধ পরকিয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে সপ্নার ।বিষয়টি সপ্নার বড় ছেলে সম্রাটের নজরে আসলে সে বিভিন্নভাবে তাদের বাধা দেয়। অবৈধ পরকিয়ার সম্পর্কের কাঁটা সরাতে গিয়ে উভয়ই সম্রাটকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুক্রবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে ফোন করে আমির আলী সম্রাটকে পূবাইল করমতলা রেললাইনের পাশে ডেকে নেয়। সম্রাটকে শারীরিক যৌন উত্তেজনার ওষুধের কথা বলে ইঁদুরের ওষুধ গ্লাসে মিশিয়ে খেতে বলে। অপরপক্ষে সে নিজে খায় যৌন উত্তজনার ওষুধ।ইঁদুরের ওষুধ মিশ্রিত পানি পান করে সম্রাট মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লে রেললাইনের পাশে সুলতানের মাছ চাষের পুকুরে ফেলে দিয়ে চলে যায় মৃত্যুর খবর পৌঁছাতে ও রাত কাটাতে তার মা সপ্নার কাছে। শনিবার সকালে পুকুরে লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশ খবর দেয়।পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠান। হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আসামি সপ্না খাতুন ও আমির আলীকে আদালতের মাধ্যমে গাজীপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রহস্য উদঘাটনে অধিকতর তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পূবাইল থানার ওসি শেখ আমিরুল ইসলাম।
Discussion about this post