নিজস্ব প্রতিবেদক।। গাজীপুরের বিএমটিএফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কর্তৃক জোরপূর্বক ছাত্রীদের বোরখা-হিজাব খুলে নেয়া, পর্দানশীল ছাত্রীদের বিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়া, ছাত্র-শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ইসলামের বিধি-বিধান পালনে বাঁধা দেয়ার ঘটনায়, বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি ২০২৫) বাদ জু’মা গাজীপুর কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে। এ সময় বিএমটিএফ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ছাড়াও বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র-আন্দোলন, ইসলামি ছাত্র শিবির, হেফাজতে ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।
আন্দোলনকারীরা জানান, প্রধান শিক্ষক মোর্শেদুল ইসলাম একজন ইসলাম বিদ্বেষী মানুষ। শুধু এই বিদ্যালয়ে না, ইতোপূর্বে তিনি আরও তিনটি বিদ্যালয় থেকে জনরোষে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন ইসলাম বিদ্বেষ ও দুর্নীতির কারনে। গাজীপুরের ঘটনায় ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেও কোন ফলাফল পায়নি।
সমাবেশে গাজীপুরের ইসলাম প্রিয় তেীহিদী জনতার পক্ষ থেকে, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা অফিসারকে এক দফা, এক দাবীর আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে। দফা-“আগামী ৮ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত ও উপযুক্ত শাস্তির ব্যাবস্থা করতে হবে। ৮ তারিখের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে, ৯ ফেব্রুয়ারী গাজীপুরের তৌহিদী জনতা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করবে এবং দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই ঘেরাও কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে।
পাশাপাশি বিএমটিএফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থান কর্মসূচী পালন করা হবে এবং অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।
প্রধান শিক্ষক মোর্শেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীরা আরও অভিযোগ বলেন, এর আগে ২০১৫ সালে মোর্শেদুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জ কমর আলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিতাড়িত হন। তখনকার সময়ে শিক্ষকবৃন্দ এবং এলাকাবাসী ও ছাত্র-ছাত্রীদের তোপের মুখে পড়ে স্কুলে পদত্যাগ পত্র জমা দেওয়ারও সময় পাননি তিনি। এরপর নারায়নগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসে উনার পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে এলাকা ত্যাগ করেন মোর্শেদুল ইসলাম। আরও জানা যায়, দুর্নীতির ও অনিয়মের দায়ের কালিয়াকৈর মৌচাক স্কাউট স্কুল থেকেও বিতারিত হতে এই স্কুল শিক্ষক মোর্শেদুল ইসলাম। পরবর্তী বিএমটিএফ উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেই নানা অপকর্মও আধিপত্যবিস্তার করেন। তাছাড়া জোরপূর্বক ছাত্রীদের বোরখা-হিজাব খুলে নেয়া, পর্দানশীল ছাত্রীদের বিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়া, ছাত্র-শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ইসলামের বিধি-বিধান পালনে বাঁধা দেয়া, বাসায় বাসায় লোক পাঠিয়ে হুমকি, হিজাব নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য, নিকাব টেনে খুলে ফেলা, শিক্ষক শিক্ষিকাদের সাথে খারাপ আচরণ, গার্ডিয়ানদের অকথ্য ভাষায় অপমানসহ আরও বহু অভিযোগ রয়েছে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এতসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে, প্রধান শিক্ষক মোর্শেদুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন। একটি চক্র রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার জন্য আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এটি একটি সেনা নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আমি পর পর দুই হব্জ করেছি, ছাত্রীদের হিজাব পড়া নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়নি।
Discussion about this post