নিজস্ব প্রতিবেদকঃ তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, সাংবাদিক সন্তানদের বৃত্তি প্রদান সরকারের যুগান্তকারী উদ্যোগ। এর ফলে সাংবাদিকদের পরিবারের ওপর অর্থনৈতিক চাপ কমবে।বৃহস্পতিবার ঢাকার তথ্য ভবনে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ও আহত সাংবাদিক এবং অসুস্থ-অসচ্ছল সাংবাদিকদের কল্যাণ অনুদান ও সাংবাদিক সন্তানদের বৃত্তির চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সাংবাদিকদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে উপদেষ্টা বলেন, এই গণঅভ্যুত্থানে অনেক সাংবাদিক সহযোগিতা করেছেন এবং ফ্যাসিবাদের বিপক্ষে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন।
আবার অনেক সাংবাদিক ফ্যাসিবাদের সহযোগী হিসেবেও কাজ করেছেন, যা খুবই দুঃখজনক। গণমাধ্যমের বিগত ১৫ বছরের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হওয়া উচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ও আহত সাংবাদিক পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার শহিদ ও আহত সাংবাদিকদের সম্মান ও স্বীকৃতি প্রদান করবে। নাহিদ ইসলাম বলেন, প্রবীণ ও গুণী সাংবাদিকদের অবসরকালীন মাসিক ভাতা প্রদানের বিষয়টিও সরকারের বিবেচনায় রয়েছে।
গণমাধ্যমের সমালোচনাকে স্বাগত জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, গণমাধ্যমের ওপর সরকারের কোনও চাপ নেই। তবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নামে ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন মেনে নেওয়া হবে না।অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা বলেন, সাংবাদিকদের অনুদান প্রদান আইন দ্বারা পরিচালিত বিষয়। অসুস্থ ও অসচ্ছল সাংবাদিকদের অনুদান পাওয়া একটি আইনি অধিকার।তিনি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন।
বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহীদুল ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, বিএফইউজের সহ-সভাপতি খায়রুল বাশার, প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী আবুল কালাম মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, সাংবাদিক মুহাম্মদ বাকের হোসাইন, সাংবাদিক সাজিদ আরাফাত ও সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য শাহীন হাসনাত।অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীন দফতর-সংস্থার প্রধান এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে ৪৬৩ সাংবাদিক পরিবারের মাঝে মোট এক কোটি ৮০ লাখ ২৬ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে ১২৭ জন সাংবাদিক ও মৃত্যুবরণকারী সাংবাদিক পরিবারকে দেওয়া হয় মোট ৮৯ লাখ টাকা।
এর পাশাপাশি ৩০৫ জন সাংবাদিকের মেধাবী সন্তানদের এককালীন বৃত্তিবাবদ ৫৫ লাখ ২৬ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। এছাড়া জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ পাঁচ সাংবাদিক পরিবারকে দুই লাখ টাকা করে মোট ১০ লাখ টাকা এবং গণঅভ্যুত্থানে আহত ২৬ সাংবাদিককে এক লাখ টাকা করে মোট ২৬ লাখ টাকা দেওয়া হয়।
Discussion about this post