স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার পৃথক স্থানে ট্রেন দুর্ঘটনায় আলামিন হোসেন (২৮) নামের এক বাকপ্রতিবন্ধী যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মারাত্মক জখম হয়েছেন ইসরাফিল হোসেন (৪০) নামের এক আলমসাধু চালক ড্রাগন বোঝায় আলমসাদু নিয়ে ট্রেন লাইন পার হওয়ার সময় এই দূরঘটনা ঘটে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল আনুমানিক ১০:১০ এর দিকে চুয়াডাঙ্গা সদরের গাইদঘাট ও বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দামুড়হুদার দুধপাতিলা এলাকায় পৃথক এ দুটি দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আলামিন হোসেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের ডিহিকৃষ্ণপুর গ্রামের ঝণ্টুর ছেলে ও আহত ইসরাফিল হোসেন আলমডাঙ্গা উপজেলার খাদিমপুর ইউনিয়নের মাজহাট গ্রামের হেলাল উদ্দিনের ছেলে। চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মিজানুর রহমান পৃথক দুর্ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এই ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল সকালে বাকপ্রতিবন্ধী আলামিন হোসেন দুধপাতিলা গ্রামে নানার বাড়িতে এসেছিলেন। সেখান থেকে বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। পথে দুধপাতিলা রেললাইনের পাশে পৌঁছালে কলকাতা থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তর্জাতিক মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন তাকে ধাক্কা দেয়। এতে মারাত্মক জখম হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে দর্শনা রেলওয়ে ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
দর্শনা রেলওয়ে ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) আতাউর রহমান বলেন, মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় বাকপ্রতিবন্ধী এক যুবক নিহত হয়েছেন। আমরা তার লাশ উদ্ধার করেছি। নিহতর পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় ও তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে, গতকাল সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গাইদঘাট অরক্ষিত রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় ট্রেনের ধাক্কায় স্যালো ইঞ্জিনচালিত একটি আলমসাধু লণ্ডভণ্ড হয়। এবং গুরুতর জখম হন আলমসাধুটির চালক ইসরাফিল হোসেন। পরে স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
স্থানীয়রা জানায়, সকালে ড্রাগন ফল ভর্তি একটি আলমসাধু গাইদঘাট গ্রামের অরক্ষিত রেললাইন পার হচ্ছিল। এসময় এই লাইনে দিয়ে রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেন আসছিল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ট্রেনের ইঞ্জিনের সঙ্গে আলমসাধুর ধাক্কা লাগে। এতে আলমসাধুটি ভেঙে লণ্ডভণ্ড হয়ে রেললাইনের একপাশে পড়ে। এবং আলমসাধুর চালক মারাত্মক জখম হন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. জোবায়দা জামান জয়া বলেন, ট্রেন দুর্ঘটনায় ইসরাফিল নামের এক ব্যক্তি মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। এই ঘটনা সম্পর্কে এলাকাবাসী বলেন গাইদঘাট অরক্ষিত রেল ক্রোচিং এ যতদ্রুত সম্ভব গেইট ম্যান দেওয়া প্রয়োজন কারণ বিগত দিনে একই স্থানে আরো অনেক দূরঘটানা ঘটেছে বলে এলাকাবাসীর দাবি।
এ ঘটনাই চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মিজানুর রহমান বলেন, আন্তঃনগর রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে ড্রাগন বোঝায় একটি আলমসাধুর সংঘর্ষ হয়েছে বলে শুনেছি। এ ঘটনায় কোন হতাহত হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।
Discussion about this post