স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর :: গাজীপুরের ডার্ড কম্পোজিট টেক্সটাইল লিমিটেডের পোশাক শ্রমিকরা ৭ মাসের বকেয়া বেতনসহ অন্যান্য পাওনাদি পরিশোধের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। শুক্রবার রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা এলাকায় ওই কারখানার দুই শতাধিক শ্রমিক সড়কে নেমে এ বিক্ষোভ করেন। তবে এ সময় মহাসড়কের এক লেন চালু থাকায় যানবাহন চলাচল সচল ছিল। সাড়ে ১২টার দিকে গাজীপুর শিল্প পুলিশের অনুরোধে তারা মহাসড়ক ত্যাগ করেন।
আন্দেলনকারী শ্রমিকরা জানান, গত সাত মাস ধরে তাদের বকেয়া বেতনসহ প্রভিডেন্ট ফান্ড ও সার্ভিস বেনিফিটের টাকা পরিশোধ করছেন না কারখানা কর্তৃপক্ষ। টাকার অভাবে তাদের জীবন চলছে না। একাধিকবার মালিকপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিলেও তা রক্ষা করেননি।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন গাজীপুর মহানগর সভাপতি শফিউল আলম বলেন, এক বছর আগে ডার্ড কম্পোজিট টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানাটি শ্রমিকদের বকেয়া বেতন, সার্ভিস বেনিফিট, প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা, নারী শ্রমিকদের প্রসূতিকালীন টাকা না পরিশোধ করে বন্ধ হয়ে যায়; কিন্তু এখনও ওই টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে না।
তিনি জানান, শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে সরকার ইতোমধ্যে মালিককে সুদমুক্ত ১৩ কোটি টাকা ঋণও দিয়েছেন। দুঃখজনক হলেও সত্য, ওই ঋণ পাওয়ার এক মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত মালিকপক্ষ সব শ্রমিক ও স্টাফদের বকেয়া টাকা দিচ্ছেন না। তবে ঋণের ১৩ কোটি টাকা পরিশোধ করার পরেও শ্রমিক-কর্মচারীদের ১৪ কোটি টাকার বেশি অর্থ বকেয়া থাকবে বলেও তিনি জানান।
জানা গেছে, গত ২২ নভেম্বর কারখানাটি স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করেন মালিকপক্ষ। বন্ধ হওয়ার দিন পর্যন্ত প্রায় আট হাজার শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করত সেখানে। কয়েক মাসের বেতন এবং বন্ধকালের আইনানুগ পাওনাদি পরিশোধ সংক্রান্ত বিষয়ে গত ২৮ নভেম্বর শ্রম আইনের সুবিধা কমিয়ে এনে একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা চুক্তি সই হয়। ওই চুক্তি অনুযায়ী, সরকার থেকে পাওনা ঋণের ১৩ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে ডার্ড গ্রুপের চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার ফয়েজ আহমেদ বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই শ্রমিকদের ৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা পরিশোধ করেছি। এক সঙ্গে সব টাকা পরিশোধ করা যায় না। বাকি টাকা অবশ্যই পরিশোধ করে দেওয়া হবে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক আব্দুল লতিফ জানান, ডার্ড কম্পোজিট টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তায় বকেয়া পাওনা পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। পরে উভয়পক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা হয় এবং সমস্যা সমাধানে শ্রমিকদের আশ্বাস দিলে তারা মহাসড়ক ত্যাগ করেন।
Discussion about this post