নিজস্ব প্রতিবেদক:: বাংলা একাডেমি বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও দেশজ সংস্কৃতির বিকাশে সাধ্যানুযায়ী প্রায় ৭ দশক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। শনিবার সাধারণ পরিষদের ৪৭তম বার্ষিক সভায় একথা বলেছেন একাডেমির সভাপতি আবুল কাসেম ফজলুল হক।
শিল্পী ফেরদৌস আরার নেতৃত্বে সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সুরসপ্তক’-এর পরিবেশনায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সঙ্গে জাতীয় পতাকা ও বাংলা একাডেমির পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সভার কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ছিল পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ। গত সাধারণ সভার পর থেকে এক বছরে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রয়াত গুণী ব্যক্তিদের স্মরণে শোকপ্রস্তাব পাঠ ও তাদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সভায় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন এবং একাডেমির সচিব মোহা. নায়েব আলী ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেট অবহিত করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক।
একাডেমির সদস্যরা বার্ষিক প্রতিবেদন ও বাজেট সম্পর্কে সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন। মহাপরিচালক সদস্যদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং উত্থাপিত প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বক্তব্য প্রদান করেন। সভায় ৪৬তম বার্ষিক সাধারণ সভার কার্যবিবরণী সারা দেশ থেকে আগত একাডেমির ফেলো, জীবনসদস্য ও সদস্যদের সম্মতিক্রমে অনুমোদন ঘোষণা করা হয়। সভায় দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৭ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে বাংলা একাডেমি ষান্মানিক ফেলোশিপ ২০২৪ এবং বাংলা একাডেমি পরিচালিত ছয়টি পুরস্কার সা’দত আলি আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪, সাহিত্যিক মোহম্মদ বরকতুল্লাহ প্রবন্ধসাহিত্য পুরস্কার ২০২৪, কবীর চৌধুরী শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০২৪, অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদ নাট্যজন পুরস্কার ২০২৪, আবু রুশ্দ সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ এবং রাবেয়া খাতুন কথাসাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ প্রদান করা হয়।
বাংলা একাডেমি সম্মানসূচক ফেলোশিপ ২০২৪ প্রাপ্তরা হলেন : মঈদুল হাসান (মুক্তিযুদ্ধ), রিচার্ড এম ইটন (ইতিহাস), অধ্যাপক ডা. সায়েবা আখ্তার (চিকিৎসাবিজ্ঞান), ড. ফেরদৌসী কাদরী (বিজ্ঞান), সুগত চাকমা (ভাষা গবেষণা), শহিদুল আলম (শিল্পকলা) এবং শম্ভু আচার্য (শিল্পকলা)।
সদ্যপ্রয়াত অনুবাদক ও গবেষক মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ ‘সা’দত আলি আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’, প্রাবন্ধিক-গবেষক ড. ওয়াকিল আহমদ ‘সাহিত্যিক মোহম্মদ বরকতুল্লাহ প্রবন্ধসাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’, শিশুসাহিত্যিক আবু সালেহ ‘কবীর চৌধুরী শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’, নাট্যজন নায়লা আজাদ ‘অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদ নাট্যজন পুরস্কার ২০২৪’, কথাসাহিত্যিক নাসিমা আনিস ‘আবু রুশ্দ সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’, কথাসাহিত্যিক সুশান্ত মজুমদার (সামগ্রিক অবদানের জন্য) ‘রাবেয়া খাতুন কথাসাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’ এবং কথাসাহিত্যিক সুমন মজুমদার অনূর্ধ্ব ৪৯ বছর বয়সি লেখকদের মধ্যে ২০২৩ সালে প্রকাশিত ‘রাইমঙ্গল’ উপন্যাসের জন্য ‘রাবেয়া খাতুন কথাসাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’-এ ভূষিত হয়েছেন।
পুরস্কার ও ফেলোশিপপ্রাপ্ত গুণীজনদের হাতে পুরস্কারের অর্থমূল্য, সম্মাননাপত্র, সম্মাননা-স্মারক ও ফুলেল শুভেচ্ছা তুলে দেন একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক এবং মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। বার্ষিক সভার কার্যক্রম পরিচালনা করেন একাডেমির উপপরিচালক সায়েরা হাবীব, কাজী রুমানা আহমেদ সোমা, ড. সাহেদ মন্তাজ, রোকসানা পারভীন স্মৃতি এবং সহপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ড. মাহবুবা রহমান।
Discussion about this post