আল আমিন, নাটোর প্রতিনিধি :- নাটোরের বাগাতিপাড়ার মাড়িয়া এলাকার কারিগরপাড়ার তাঁতি পরিবারগুলোর বর্তমানে দুর্দিন যাচ্ছে। আগের মতো তাঁতের কাপড়ের চাহিদা না থাকায়, উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি ও সরকারি সাহায্য- সহযোগিতা না পাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়ে বিলুপ্তির পথে তাদের বংশগত পেশা এই তাঁতশিল্প। বাধ্য হয়ে তাই অনেকে পেশা পরিবর্তন করছেন। এমন অবস্থায় সরকারি সহযোগিতা ছাড়া এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব না বলে জানিয়েছেন তারা। বর্তমানে ওই এলাকায় প্রায় ৩০টি পরিবার তাঁতশিল্পের সঙ্গে জড়িত। কয়েক বছর আগেও আরো অনেক পরিবার ছিল, যারা এই পেশার সঙ্গে জড়িত ছিল। কিন্তু দিন দিন অলাভজনক হওয়ায় বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন অনেকে। সরেজমিনে এলাকার তাঁতিদের বাড়িগুলো ঘুরে দেখা যায়, ঘরের বারান্দায় বসানো আছে তাঁতযন্ত্র। পরিবারের নারী সদস্যরা তাঁতে গামছা বুনতে ব্যস্ত। স্থানীয় তাঁতশিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁতের কাপড়ের কদর কমেছে সারা দেশে। আধুনিক মেশিন দিয়ে তৈরি কাপড়ের কারণে আগের তুলনায় এর খুব একটা ব্যবহার নেই বললেই চলে। দুই একজন শখ করে পরছে এ তাঁতের কাপড়। তাই বলা যায় তাঁতশিল্প এখন বিলুপ্তির পথে। তার পরও বাপ-দাদার পেশা ধরে রাখতে বিপদে থেকেও কাজ করছেন কেউ কেউ। তাঁতশিল্পীরা জানান, মাড়িয়া এলাকায় কারিগরপাড়ায় একসময় দুই শতাধিক বাড়িতে তাঁতের কাজ হতো। সারা দিন বাহারি রঙের গামছা, লুঙ্গি, শাড়ি তৈরিতে ব্যস্ত থাকতেন গ্রামের গৃহবধূরা। আর সেসব বিক্রি করতে বিভিন্ন গ্রামের বিভিন্ন হাটবাজারে। আগের দিনে হাট-বাজারে যেতেন পরিবারের পুরুষ সদস্যরা, কিনে আনতে হাতে বোঁনা তাঁতের শাড়ি-লুঙ্গি আর গামছা। এক সময় বেশ কদর ছিল এখানকার কাপড়ের।এখানকার তৈরি কাপড় কিনতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা আসতেন। বর্তমানে বেহাল দশা এই তাঁত শিল্পের। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না পেলে এ এলাকায় তাঁতশিল্প ধরে রাখা সম্ভব হবে না বলেও জানান এখানকার স্থানীয় তাঁত শিল্পীরা । মাড়িয়া কারিগরপাড়ার তাঁতশিল্পী বেলী বেগম জানান, ছোটবেলা থেকেই তিনি এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত।বর্তমানে চরম দুর্দিন পার করছেন তারা। পাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন বলেন, তাঁতশিল্পীদের সাহয্য করার মতো কোন বরাদ্দের ব্যবস্থা নেই ইউনিয়ন পরিষদে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হা-মিম তাবাসসুম প্রভা বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে তাঁতশিল্পের উন্নয়নে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।
Discussion about this post