নিজস্ব প্রতিবেদক:: যৌতুকবিহীন বিয়ে করায় রংপুরের গঙ্গাচড়ায় ১১ নবদম্পতিকে দেওয়া হয়েছে উপহার। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে গঙ্গাচড়া সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এই ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গঙ্গাচড়া উপজেলা শাখা।
নবদম্পতির পরিবারগুলোকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয় স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থ, খাট, তোশক, বালিশ, কম্বল, আলমারিসহ সাংসারিক জীবনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আসবাবপত্র।
এসব উপহারসামগ্রী পাওয়া কোলকোন্দ ইউনিয়নের মাদ্রাসাপাড়া এলাকার রাজীব মিয়া ও আয়েশা বেগম নবদম্পতির সঙ্গে কথা হয়। রাজীব মিয়া বলেন, ‘আমি নিজেও একজন গরিব পরিবারের সন্তান। আমার নিজের দুই বোন। আমি ছোট ছিলাম, ততটা বুঝতাম না। আমার বাবা অনেক কষ্ট করে আমার বোনটাকে যৌতুক দিয়ে বিয়ে দেয়। সে সময় বোনের বিয়েতে যৌতুক দিতে আমার বাবার কতটা কষ্ট হয়েছিল, আমি দেখেছি, যার ঘানি আমার বাবাকে অনেক দিন টানতে হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার বাবার এই কষ্ট দেখে আমি নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আমার ছোট বোনকে যৌতুকের বিনিময় বিয়ে দেব না। আমিও যৌতুক নিয়ে বিয়ে করব না। এ জন্য আমি কয়েক দিন আগে যৌতুক ছাড়া বিয়ে করি।’
রংপুর নগরীর লোকমান হাকিম ও আরফিনা আক্তার নবদম্পতিও এ উপহার পেয়েছেন। লোকমান হাকিম বলেন, ‘যৌতুক নেওয়া ও দেওয়া ইসলামি শরিয়ায় হারাম। আর আমি একজন মুসলিম হয়ে কেন মানুষের টাকার প্রতি লোভ দেব। এর জন্য আমি আমার সাধ্য অনুযায়ী যৌতুক ছাড়া বিয়ে করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আমার মুসলিম ভাইদের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনারা বিয়ের সময় শ্বশুর পরিবারের লোকজনকে কষ্ট দিয়ে কিছু নেবেন না। কাউকে কষ্ট দিয়ে কিছু নিয়ে সুখে থাকা যায় না।’
উপহার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রংপুর মহানগর শাখার সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক রায়হান সিরাজী। এ সময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী উপজেলা শাখার আমির মাওলানা নায়েবুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপজেলা নায়েবে আমির তাজ উদ্দিন, সেক্রেটারি মাওলানা সাইফুল ইসলাম, গঙ্গাচড়া ইউনিয়ন আমির মনিছুর রহমান, জামায়াত নেতা শরিফুল হুদা দুলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post