ক্রাইম রিপোর্টার : বাগেরহাট সদর সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসে ব্যাপক জাল-জালিয়াতি ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সেবাগ্রহীতাকে জিম্মি করে অবৈধভাবে অর্থ আদায়, জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে রাজস্ব ফাঁকি, নির্ধারিত ফিসের বাইরে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, মূল দলিলের নকল উত্তোলন করার জন্য সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে ২/৩ গুণ বেশি ফি আদায়, টাকার বিনিময়ে মূল দলিলের নকল কপিতে ভূয়া গ্রহীতার নাম লিখে নকল সরবরাহ করা, নকলের সার্টিফাইড কপি অফিসে জমা না দিয়ে ভূয়া কেস নাম্বার দিয়ে গ্রাহকের নিকট সরবরাহ করে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করা, মূল দলিলে গ্রহীতার নাম পরিবর্তন করে দেয়াসহ নানা অপকর্মের মহোৎসব চলছে বাগেরহাট সদর সাব-রেজিস্ট্রার বিদ্যুত কুমার মন্ডলের বিরুদ্ধে।
বাগেরহাট সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের টিসি মহুরার তপন কুমার যোগসাজসে একশ্রেণির দালাল সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন সেবা প্রত্যাশীরা। দলিল লেখক, স্ট্যাম্প ভেন্ডার ও স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত এ সিন্ডিকেটের যোগসাজশে সাব-রেজিস্ট্রার বিদ্যুত কুমার মন্ডল নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছেন। সিন্ডিকেটের সাথে হাত মিলিয়ে সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে জমির শ্রেণি পরিবর্তন দেখিয়ে, সাব-কবলা দলিলের পরিবর্তে হেবাবিল এওয়াজ, অসিয়ত নামা, ঘোষণাপত্র, আমমোক্তার নামা, দানপত্র দলিল রেজিষ্ট্রি করে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
বাগেরহাট সদর সাবরেজিস্টার বিদ্যুত কুমার মন্ডল অফিসে যোগদানের পর থেকে এ দালাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাধ্যতামূলকভাবে প্রতি দলিল থেকে পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকা শেরেস্তার নামে জনগনকে জিম্মি করে জনগনের ঘামঝরানোর এসব অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। জনগনের নিকট হতে আদায় কৃত অতিরিক্ত এ টাকা দলিল লেখক সমিতি, মসজিদ ও বিভিন্ন জাতীয় দিবসের চাঁদা ছাড়া বাকি টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ ভাটোয়ারা করে আত্মসাৎ করা হচ্ছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ দলিল হেবাবিল এওয়াজ, আমমোক্তার নামা ও দানপত্র ও ঘোষণাপত্র দলিল।
এতে বিপুল পরিমাণ সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেয়া হয়েছে। রেজিস্ট্রি করা দলিল পরীক্ষা করলে এর সন্ধান পাওয়া যাবে বলে মনে করেন অনেকেই । সরেজমিন গিয়ে ভুক্তভোগীদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, দলিলের ফি ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করলেও শেরেস্তা (অতিরিক্ত ফি) ছাড়া সাব-রেজিস্ট্রার বিদ্যুত কুমার মন্ডল কোনো দলিল রেজিস্ট্রি করেন না। তার চাহিদা মতো টাকা না পেলে বিভিন্ন কাগজপত্রের অজুহাতে হয়রানি করা হয়। আবার টাকা পেলে সব বৈধ হয়ে যায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক দলিল লেখক জানান, শেরেস্তা না দিলে জমি রেজিস্ট্রি তো দূরের কথা সীমাহীন হয়রানির স্বীকার হতে হয় ভুক্তভোগীদের। তাই বাধ্য হয়েই শেরেস্তা (অতিরিক্ত ফি) দিয়ে দলিল রেজিস্ট্রি করতে হয়।
তবে কাগজপত্রে ঝামেলা থাকলে ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়। নিয়মবহির্ভূতভাবে প্রত্যেক দলিল থেকে শেরেস্তার নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হলেও সিন্ডিকেটের ভয়ে এ নিয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি হচ্ছে না। (বিস্তারিত আরো জানতে আমাদের সাথেই থাকুন)।
Discussion about this post