আল আমিন, নাটোর প্রতিনিধি :- নাটোরের সিংড়ার চলনবিলাঞ্চলের কৃষকরা পানিফল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। অল্প খরচে লাভবান হওয়ায় প্রায় দুই দশক ধরে এই এলাকার কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে পানিফলের চাষ করে আসছেন। তবে বিগত কয়েক বছরের চেয়ে এ বছর আগাম চাষ করায় শীতের আগেই ফল ধরা শুরু করেছে। তাই জমি থেকে ফল সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকেরা। পানিফল চাষ করে সফল হয়েছেন পৌর এলাকার চকসিংড়া মহল্লার কৃষক সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ১০ বছর ধরে পানিফল চাষ করে আসছি। এ বছর ৩ বিঘা জমিতে বিক্রি হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। ১ লাখ টাকার বিক্রি করার আশায় আছি। অন্যান্য কৃষকরা বলেন, শীতের শুরুতে বাজারে পানিফলের চাহিদাবেশি থাকে। দামও বেশি পাওয়া যায়। উপজেলার রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়নের বৈগ্রামে গিয়ে দেখা যায়, জমি থেকে পানিফল সংগ্রহ করছেন কৃষক। প্রতি বছর গ্রামের ৮ থেকে ১০ জন কৃষক পানিফল চাষ করেন। এ বছর তাদের পানিফল চাষের জমির পরিমাণ প্রায় ২২ বিঘা। এই গ্রামের কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে পানিফল চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। স্থানীয় কৃষকরা জানান,প্রায় ৩০ বছর আগে এই গ্রামে প্রথম পানিফলের চাষ শুরু করেন রহিম উদ্দিন। রহিম উদ্দিনের সফলতা দেখে এ গ্রামের অনেকেই ঝুঁকে পড়েন পানিফল চাষে। কৃষক রহিম উদ্দিন বলেন, পতিত পুকুর-ডোবা- নালায় বর্ষাকালে অল্প পরিমাণ পানি থাকে, এমন নিচু জমিতে পানিফলের চাষ ভালো হয়। অল্প খরচে লাভ বেশি হলেও পরিশ্রম করতে হয় বেশি। প্রতিদিনই জমি থেকে ফসল সংগ্রহ করেন। তিনি বলেন, আমি অন্য কোনো আবাদ করি না। প্রতি বছরই দু-এক বিঘা জমি ইজারা নিয়ে পানিফল চাষ করি। এ বছর ৭ হাজার টাকা ইজারাসহ আমার মোট খরচ ১২ হাজার টাকা। নিজে পরিশ্রম করি তাই শ্রমিক খরচ কম। তিনি এ জমি থেকে খরচ বাদে ৭০ হাজার টাকা লাভের আশা করছেন। কৃষক আব্দুল মজিদ, ইদ্রিস আলী ও শহিদ হোসেন জানান, এবার ফলন ও বাজার মূল্য দুটোই ভালো। দেড় থেকে দুই হাজার টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। শীতের শেষ পর্যন্ত বাজার ঠিক থাকলে গত বছরের চেয়ে লাভ বেশি হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ খন্দকার ফরিদ উদ্দিন বলেন, সিংড়া উপজেলার রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়নের বৈগ্রামসহ পৌরসভার চকসিংড়া, তাজপুর, কলম এবং শেরকোল ইউনিয়নের পতিত ও নিচু জমিতে বাণিজ্যিকভাবে কৃষকরা পানিফল চাষ করছেন। এতে খরচ ও পরিশ্রম কম, লাভ বেশি। উপজেলা কৃষি অফিস পানিফল চাষে সকল ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
Discussion about this post