স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর :: গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার ড. মো. নাজমুল করিম খান পরিবহন মালিকদের উদ্দেশে বলেছেন, রাস্তার যানজট নিরসনে নিজেরা স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ করুন। এতে যানজট কমে আসবে। প্রয়োজনে যাচাই-বাছাই করে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে ওইসব স্বেচ্ছাসেবীদের এসবি পাশ দেওয়া হবে।
মাদকবিরোধী স্বেচ্ছাসেবী তৈরি করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো এলাকায় যাতে মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারী থাকতে না পারে। তাই প্রতিটি এলাকায় মাদকবিরোধী স্বেচ্ছাসেবী তৈরি করতে চাই। এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, ধর্ষণসহ সমস্ত অপরাধের মূলে প্রধান উপাদান হলো মাদক। তাই যেকোনো মূল্যে মাদককে নির্মূল করতে হবে।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে জয়দেবপুর বাসস্ট্যান্ডে অংশীজনদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
জিএমপি কমিশনার ড. মো. নাজমুল করিম খান বলেন, জুলাই-আগস্টের আগে গায়েবি মামলার মাধ্যমে মানুষকে হয়রানি করা হয়েছে। পুলিশ নির্বিচারে গুলি করেছে। মানুষকে হত্যা করেছে। অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করেছে। যারা এটি করেছে, তারা ঘৃণ্যতম অপরাধ করেছে। এর মাধ্যমে পুলিশের ইমেজ নষ্ট করেছে। পুলিশকে আক্রান্ত হতে হয়েছে। আমরা সেখান থেকে বের করতে চাই। পুলিশ জনগণের পাশে থাকতে চাই।
তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টের আগে যে পুলিশ ছিল দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, সেই পুলিশ জনগণের উপকার তো দূরের কথা অপরাধীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেছিল। তখন পুলিশ ছিল না, পুলিশ লীগ ছিল। আপনারা পুলিশের অত্যাচার, অপরাধীর অত্যাচার, সহ্য করেছেন এতদিন। পুলিশের আসল লক্ষ্য—দুষ্টের দমন, সৃষ্টের সেবন। যারা ভালো মানুষ তাদের সেবা করার জন্য এসেছি। আপনাদের সঙ্গে নিয়ে এলাকার মাদকমুক্ত করতে চাই। এ এলাকায় কোনো মাদক থাকবে না।
ড. মো. নাজমুল করিম খান বলেন, জুলাই-আগস্টের আগের পুলিশ আর বর্তমান পুলিশ ভিন্ন। এটি আমি প্রমাণ করে যাবো। আপনাদের সহযোগিতায় আমি এলাকাকে মাদকমুক্ত করে যাবো।
তিনি আরও বলেন, থানায় অভিযোগ করতে গিয়ে পুলিশকে যদি পাঁচ টাকাও দিতে হয় আমাকে জানাবেন তার চাকরি করার দরকার নাই। সে পুলিশের চাকরি করবে না—এটার নিশ্চয়তা দিতে চাই, যতদিন আমি আছি। যে পুলিশ ছিনতাইকারী ও মাদকের পক্ষে অবস্থান নেবে আপনারা আমাকে জানাবেন। পুলিশকে ভালো হতেই হবে। পুলিশকে ভালো করার মধ্যমে সমাজকে ভালো করতে চাই।
গাজীপুরে জনসংখ্যার তুলনায় পুলিশের সংখ্যা খুবই কম জানিয়ে জিএমপি কমিশনার বলেন, এখানে সাড়ে ৫ হাজার মানুষের জন্য একজন পুলিশ কাজ করছে। তাই পুলিশকে সহযোগিতা করতে হবে। যারা পুলিশের সাথি হবে তাদেরকে নিয়ে আমরা অপরাধীদের ধরতে চাই। পুলিশের মতো আপনাদেরও গ্রেপ্তারের ক্ষমতা আছে। জনগণকে এটা আইনিভাবে দেওয়া হয়েছে। যদি কোনো মাদক ব্যবসায়ী দেখতে পান তা হলে তাকে ধরুন, পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যাবে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান, ডিসি ক্রাইম রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, ডিসি ট্রাফিক ইব্রাহিম খান, বিএনপি নেতা হান্নাম মিয়া হান্নু, মোফাজ্জল হোসেন, সাইফুল ইসলাম টুটুল, সমন্বয়ক ইসহাক টিপু, সাদেকুজ্জামান, সদর থানার ওসি আরিফুর রহমান প্রমুখ।
Discussion about this post