স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর :: গাজীপুরের শ্রীপুরে অবস্থিত সাফারি পার্কের ম্যাকাউ পাখিশালার নেট (জাল) কেটে ৮ লাখ টাকা মূল্যের দুটি গ্রিন উইং ম্যাকাউ পাখি চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পার্কের পক্ষ থেকে শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। রোববার সকালে পাখি চুরি যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম। গত শুক্রবার রাতের কোনো এক সময় ম্যাকাউ পাখিশালার বেষ্টনীর নেট কেটে দুটি ম্যাকাউ পাখি চুরি হয়। এ বিষয়ে অবহিত হওয়ার পর টঙ্গীর পাখি মার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি পাখি উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক রাজু আহমেদ বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় অজ্ঞাত চোরদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২২ নভেম্বর দিবাগত রাতের কোনো এক সময় সাফারি পার্ক গাজীপুরের অভ্যন্তরে ম্যাকাউ পাখিশালার নেট কেটে ২টি গ্রিন উইং ম্যাকাউ পাখি কে বা কারা নিয়ে যায়। চুরি করা পাখি দুটির আনুমানিক বাজার মূল্য ৮ লাখ টাকা। পরবর্তীতে ২৩ নভেম্বর ভোর বেলা ম্যাকাউ পাখিশালায় নিয়োজিত কর্মচারীরা বেষ্টনী পরিষ্কার করতে গিয়ে নেট ছেঁড়া দেখতে পেয়ে পাখি গণনা করে ২টি ম্যাকাউ পাখি কম পায় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
শ্রীপুর থানার এসআই নাজমুল হাসান বলেন, থানায় লিখিত অভিযোগের তদন্তভার পাওয়ার পরপরই তিনি ঘটনার সময়কার পার্ক এলাকায় তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করেন। পরবর্তীতে তার বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে ওই দিনই টঙ্গী বাজার এলাকার সেনা কল্যাণ রোডে অবস্থিত পাখি বেচাকেনার মার্কেটের একটি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। পরবর্তীতে সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে টঙ্গীর একটি পাখি বিক্রির দোকান থেকে চুরি যাওয়া একটি ম্যাকাউ পাখি উদ্ধার করেন। পাখিটি মাত্র ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছিল বলে দোকান মালিক জানান। তবে তদন্তের স্বার্থে চুরি ও বেচাকেনার সঙ্গে জড়িতদের নাম পরিচয় প্রকাশ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল হাসান।
সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক রাজু আহমেদ বলেন, পাখিটির মুখে স্কচটেপ পেঁচিয়ে ধস্তাধস্তি করে বের করে নিয়ে যাওয়ায় পাখিটি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বর্তমানে পাখিটির চিকিৎসা চলছে।
ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) শারমিন আক্তার বলেন, বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের সহায়তায় টঙ্গী বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি পাখি উদ্ধার করা হয়েছে। বিভিন্ন সাক্ষীদের জবানবন্দির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা চোরকে শনাক্ত করতে পেরেছি। তাকে গ্রেফতারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তবে আমাদের ধারণা অপর পাখিটি হয়তো বেঁচে নেই। আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করব, এ ঘটনায় কারো অবহেলা বা গাফিলতি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। সর্বশেষ সাফারি পার্কে এখনো ২৭টি ম্যাকাউ পাখি আছে।
Discussion about this post