স্টাফ রিপোর্টার, টঙ্গী :: টেক্সটাইল শিল্পে বাংলাদেশে যত কারখানার রয়েছে তার মধ্যে নোমান গ্রুপ তার স্বমহিমায় এগিয়ে রয়েছে। এদেশে নোমান গ্রুপ শতভাগ শ্রমিক বান্ধব শিল্প প্রতিষ্ঠান। টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানিতে শীর্ষস্থানীয় এ শিল্প গ্রুপটি বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে পণ্য রপ্তানি করে থাকে। শতভাগ কমপ্লায়েন্স মেনে শ্রমিক স্বার্থ পূরণসহ পরিবেশ রক্ষায় দেশের সবচেয়ে উচ্চমানের শোধনাগারের মাধ্যমে বর্জ্য শোধন করা হয়। ক্যামিকেল বর্জ্য থেকে উৎপাদিত স্ল্যাজ দেশের নামী দামি বিভিন্ন সিমেন্ট কারখানায় কাঁচামাল হিসেবে সরবরাহ করা হয়। পুন:ব্যবহারযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব উৎপাদন প্রক্রিয়া এবং জিরো ওয়েস্ট পলিসি অনুসরণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি নদ-নদীর জলজপ্রাণী ও পরিবেশ সংরক্ষণে অবদান রাখছে। নোমান গ্রুপ আপাদমস্তক একটি পরিবেশবান্ধব উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠান।
গাজীপুরের টঙ্গী ও শ্রীপুরে নোমান গ্রুপের ৩৪টি কারখানা রয়েছে। এতে কাজ করছে প্রায় ৮০ হাজার শ্রমিক। এসব কারখানা গড়ে তুলতে প্রায় ১৫০০ বিঘা নিষ্কণ্টক জমিও কিনেছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। নোমান গ্রুপের উত্তরোত্তর সাফল্য বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্পের জন্য অনুপ্রেরণামূলক ও আশা জাগানিয়া। নোমান গ্রুপের সাফল্যে ঈর্ষাণি¦ত হয়ে ৫ই আগস্টের পর একটি কুচক্রীমহল প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা বলছেন দেশের স্বার্থবিরোধীরাই প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংস করতে উঠেপড়ে লেগেছে।
কারখানা কর্তৃপক্ষ জানান, প্রায় চার দশকের অভিজ্ঞতা আর বিশ্বমানের উৎপাদন প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানটি টেক্সটাইল খাতে এক অসামান্য অবস্থানে রয়েছে। নোমান গ্রুপের উদ্ভাবনী চিন্তাচেতনা ও ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। এগ্রুপটি শতভাগ কমপ্লায়েন্স মেনে ব্যবসা পরিচালনা করছে। ফলে বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কোনো শ্রমিকের কোনোপ্রকার অভিযোগ নেই। তাই দেশের ইতিহাসে কখনো এ কারখানায় দাবি-দাওয়া নিয়ে কোনো শ্রমিক অসন্তোষ দেখা যায়নি। সর্বত্রই সঠিক সময়ে বেতন-ভাতা পরিশোধের সুনাম রয়েছে এ কারখানাটির। নোমান গ্রুপের প্রতিটি কারখানায় শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে চিকিৎসা কেন্দ্র, শিশুদের জন্য ডে-কেয়ার সেন্টারও স্থাপন করা হয়েছে।
দেশের রপ্তানি খাতে অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে নোমান গ্রুপ শীর্ষস্থানীয়। মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন ও গ্রাহকের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিজেদের পণ্য সরবরাহ করছে। বর্তমানে বিশ্বের ৮০টিরও বেশি দেশে নোমান গ্রুপের টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানি করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এগ্রুপটির বর্তমানে সারা বিশ্বে ক্রেতা রয়েছে ৯০৩টি প্রতিষ্ঠান।
ইতিমধ্যে দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখায নোমান গ্রুপের অন্যতম প্রতিষ্ঠান জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিক্স টানা ১২ বার সেরা রপ্তানিকারক হিসেবে জাতীয় রপ্তানি পুরস্কার পেয়েছে। দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বেকার সমস্যার সমাধান, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে রিজার্ভ বৃদ্ধি, শিল্পায়নে ভূমিকা রাখায় জাবের এন্ড জোবায়ের ফেব্রিক্স ও নোমান টেরিটাওয়েল প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার রাষ্ট্রপতি শিল্প পদক দেয়া হয়েছে।
এ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও পরিচালকবৃন্দ ২০০৭ সাল থেকে অদ্যবধি প্রতিবছর সিআইপি (শিল্প), সিআইপি (রপ্তানি) নির্বাচিত হয়ে আসছেন। নোমান গ্রুপ পরিবেশের প্রতি যতœ ও দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
প্রতিটি কারখানা প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণ, পরিবেশবান্ধব কারখানা তৈরিতে সর্বদা সচেষ্ট নোমান গ্রুপ।
এব্যাপারে টঙ্গী জাবের এন্ড জোবায়ের কারখানার ডেপুটি জেনারের ম্যানেজার মো. জাকির হোসেন (স্থায়িত্ব) বলেন, টঙ্গী জাবের এন্ড জোবায়ের ফেব্রিক্স লিমিটেড কারখানায় উচ্চমানের ইটিপি রয়েছে। নদ-নদীর জলজ প্রাণী ও পরিবেশের বিষয়টি মাথায় রেখে বর্জ্য পরিশোধনে আমরা কোনো প্রকার ক্যামিকেল ব্যবহার করি না। বিদেশের বায়ারগণ আমাদের প্লান্টের পানি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছেন শোধনের পর যে পানি আমরা বিভিন্নস্থানে ফেলে দেই সেই পানি পরিবেশের জন্য কোনো প্রকার ক্ষতিকর নয়। এছাড়াও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্তকর্তাগণ বিনা নোটিশে প্রায়ই আমাদের কারখানায় পরিদর্শণে আসেন এবং স্যাম্পল হিসেবে পানি নিয়ে তাদের ল্যাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে থাকেন। আলহামদুলিল্লাহ, বিগত ১৫ বছর যাবত আমাদের কারখানার কোনো নেতিবাচক রির্পোট নেই। আমরা ৩৬৫দিনই ইটিপি চালু রাখি। একমূর্হুতের জন্যই ইটিপি বন্ধ রাখা হয় না। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বিদেশি বায়ার এবং সিসিটিভির মাধ্যমে গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তর সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করে থাকেন।
Discussion about this post