নিজস্ব প্রতিবেদক: লোভনীয় বেতনে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাৎ ও প্রতারনার অভিযোগ উঠেছে ডায়মন্ড লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানি লি: নামক এক বীমা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে প্রতারনার শিকার কিশোরগঞ্জ জেলার তারাইল থানা দক্ষিন ধলা এলাকার শেখ জামালের ছেলে জুয়েল মিয়া (১৭) জিএমপি’র সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সে মহানগরের ৫৬নং ওয়ার্ড আরিচপুর মেঝো বোনের বাসায় থাকতেন। অভিযুক্তরা হলেন- কিশোরগঞ্জ জেলার তারাইল থানা দক্ষিন ধলা এলাকার আলাল উদ্দিনের ছেলে রামিম (১৮), প্রতিষ্ঠানের রুম লিডার মোঃ আমিরুল (২৭), জেনারেল ম্যানেজার মোঃ মোশারফ (৩২), সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মোঃ তরিকুল (৩২)। এরা জয়দেবপুর শহরের ২৮ নং ওয়ার্ড মাধববাড়ীস্থ ডায়মন্ড লাইফ ইনসিওরেন্স কোঃ লি এর কর্মকর্তা। অভিযোগের বাদী জুয়েল মিয়া জানান, তিনি একজন চাকরি প্রার্থী। অফিসাল কাজে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধাসহ ১৬ হাজার টাকা বেতনে চাকরী প্রলোভনে দেখায় কর্মকর্তারা। বিনা রশিদে একাউন্ট খোলার নামে জামানত বাবদ ৩৫,৫০০ টাকা জমা দেন জুয়েল। সাত দিনের মধ্যে চাকরীতে যোগদান নতুবা টাকা পরিশোধের অঙ্গীকার করেন ওই কর্মকর্তারা। বেশ কয়েকদিন অতিবাহিত হলে চাকরীর বিষয়ে জানতে চায় জুয়েল। এরপর শুরু হয় নানান তালবাহানা। এতে সন্দেহ হয় জুয়েলের। এরপর গত ১৬ নভেম্বর সকালে টাকা ফেরত চাইতে মাধববাড়ীস্থ ডায়মন্ড লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানি লি: অফিসে যান জুয়েল। পরবর্তী টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো জুয়েলকে মারধর করেন মোশারফ নামের এক কর্মকর্তা। চারদিন জোরপূর্বক আটকে রেখে হুমকি-ধামকি দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয় জুয়েলকে। জুয়েল আরও জানান, ডায়মন্ড লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানিতে প্রতারনার শিকার হয়েছি। আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে আমার ৩৫,৫০০ টাকা আত্মসাৎ করেন মোশারফ ও তরিকুল। আমি টাকা ফেরত চাইতে গেলে আমাকে হুমকি দিয়ে বের করে দেওয়া হয়। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অত্র অফিসের জেনারেল ম্যানেজার মোশারফ বলেন, থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে কিনা আমি জানিনা। আর অভিযোগ যে কেউ যে কারও বিরুদ্ধে করতে পারেন। যে অভিযোগ করেছেন সে একটা বীমা করেছেন। বীমার বৈধতা আছে। সে (জুয়েল) যেনে বুঝে আমাদের অফিসিয়ালি সমস্ত ডকুমেন্টে সাক্ষর করেছেন। অনুসন্ধ্যানে জানা গেছে, ডায়মন্ড লাইফ ইনসিওরেন্সের আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল ২০১৪ সালের ২০ ফেব্রæয়ারি। প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় সুরমা টাওয়ার পুরানা পল্টন হলেও সারাদেশের ৩০টি জেলায় ৫২ টি কার্যালয় নিয়ে মাকড়সার জালের মত ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এ প্রতিষ্ঠানটি। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে আইনের চোঁখকে ফাঁকি দিয়ে নিত্য নতুন অপরাধ করছে ডায়মন্ড লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানি লি: এর কর্মকর্তারা। লোভনীয় বেতনের চাকরির ফাঁদে দেশের প্রত্যান্ত অঞ্চলের শিক্ষিত-বেকাররা যোগাযোগ করলেই শুরু করে প্রতারণা। চাকরি বাবদ জামানতসহ বিভিন্ন প্রলোভন দেখায় ডায়মন্ড লাইফ ইনসিওরেন্সের কর্মকর্তারা। তাঁরা প্রথমে গ্রাহকদের নিকট থেকে বীমার কথা বলে জামানতের টাকা সংগ্রহ করেন। কিন্তু অধিকাংশ টাকার কোনো রশিদ পাননা গ্রাহকরা। তাদের উদ্দেশ্য সফল করার লক্ষ্যে ও মানুষের কাছে বিশ্বাস যোগ্যতা অর্জনের জন্য বহুরূপী সাজে নিজেদেরকে সাজিয়ে উপস্থাপন করে চাকরীর প্রলোভন দিয়ে কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। এদিকে এসব প্রতারনার বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনীর তদারকি দরকার বলে মনে করেন গাজীপুরের সচেতন মহল।
Discussion about this post