নিজস্ব প্রতিবেদক :: গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার মাওনা চৌরাস্তা এলাকার মাকদের সম্রাট রিয়াল আহমেদ-ই রিয়্যাল ডন। ৫-ই আগস্টের পূর্বে মাদক ব্যবসায় তাকে শেল্টার দিতো আ. লীগ নেতা লিয়াকত ফকিরের ছোটভাই শওকত ফকির ও আ.লীগ নেতা ডন এর ভাই আজিজুর রহমান জন। জন ছিলেন যুবলীগ নেতা। রিয়ালকে বর্তমানে কিছু বহিষ্কৃত শ্রমিকদলের নেতাকর্মীরা শেল্টার দিচ্ছে বলে চাউর হয়েছে। রিয়ালের নামে শ্রীপুর থানায় একাধিক হ”ত্যা মামলাসহ, ছিনতাই, ডাকাতি ও বহু মাদক মামলা রয়েছে। রিয়ালের মাদকের গোডাউন অব-দা (পল্লী বিদ্যুৎ মোড়) থেকে প্রশিকা সড়কে। একটি ভাঙ্গারির গোডাউনে সে মাদকদ্রব্য রেখে সেখান থেকেই খুচরা কারবারিদের নিকট পাইকারি বিক্রি করেন। সেইসঙ্গে চুরির ভাঙ্গারি মালামালও ক্রয় করে দেদারসে উভয় ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে রিয়াল। মাওনা চৌরাস্তা আশেপাশে ও পৌরসভার প্রায় সকল গ্রামেই তার মাদক বিক্রেতা (খুচরা ব্যবসায়ী) রয়েছে। তার থেকে পাইকারি ক্রয় করে বাড়িতে বাড়িতে পর্যন্ত মাদকদ্রব্য পৌঁছে দিচ্ছে রিয়াল। রিয়ালের উত্থান হয় চুরি ও ছিনতাইয়ের মাধ্যমে। তার পিতার নাম জয়নাল আবেদীন। অব-দা মোড়ের পশ্চিম পাশে গত কয়েক বছরে মাদকের টাকায় ৬ তলা একটি ভবন নির্মাণ করেছে সে। পূর্বে আ.লীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার পরও বর্তমানে শ্রীপুর শিল্পাঞ্চল শ্রমিকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে নতুন করে বিএনপি’র রাজনীতিতে আবির্ভাব ঘটে তার। ৫ আগস্টের পূর্বে রিয়ালের অবস্থান ছিল বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সরাসরি বিরুদ্ধে । অনুসন্ধানে জানা যায়, রিয়ালের মাদক ব্যবসার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে কিছুদিন পূর্বে তার-ই সহকর্মীদের সঙ্গে ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছিল। তাদের মধ্য থেকে নাম গোপন রাখার শর্তে সংশ্লিষ্ট একজন জানিয়েছেন, রিয়াল হলো সম্প্রতি বহিষ্কৃত শ্রমিকদল নেতা কাজল ফকিরের সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ পদে রয়েছে। মাদক ব্যবসায় বেশ কয়েকজন নেতাকে টাকা নিয়ে শেল্টার পাচ্ছে সে। এ কারণে মাদক ব্যবসার লভ্যাংশের একটি অংশ পায় কয়েকজন নেতা। এর মধ্যে শ্রমিকদল নেতা সোহেল ৬%, জামাল ৮% এবং অন্যান্য নেতাকর্মীরা ২৫% ভাগ পায়। অনুসন্ধানে জানা যায়, মাদককাণ্ডের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে ঝামেলার সৃষ্টি হওয়ায় ওই ব্যক্তি এসব তথ্য জানিয়েছেন। নাম পরিচয় গোপন রাখার শর্তে মাওনা চৌরাস্তা এলাকার বেশকিছু ব্যবসায়ী এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ রিয়ালের মাদককাণ্ড প্রসঙ্গে মুখ খোলেন। সরকার পতনের পর তার শেল্টারদাতাদেরও পরিবর্তন হয়েছে বলে অনুসন্ধানে উঠে আসে। অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, রিয়াল মাদক ব্যবসা করে বর্তমানে স্থাবর সম্পত্তিসহ প্রায় ২০ কোটি টাকার মালিক হয়েছে রিয়াল। সে মূলত টাকার জোরে শ্রমিকদল শিল্পাঞ্চল কমিটির পদ পেয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। রিয়ালের বিরুদ্ধে শ্রীপুর থানায় দুটি হত্যা মামলাসহ, চুরি ও ছিনতাই মামলা রয়েছে। তবে অবাক করা তথ্য হলো মাদকের ডন হয়েও তার বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনো মাদক মামলা হয়নি। তার মাদক ব্যবসা করার বিষয়টি বর্তমানে ওপেন সিক্রেট একটি ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। ছোটবড় সকলেই তার মাদককাণ্ডের বিষয়ে খুব ভালোভাবেই অবগত রয়েছে। তবে রাজনৈতিক শেল্টারে সে সবসময়ই ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে বলে জানা যায়। সার্বিক অভিযোগ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত রিয়াল বলেন, আমি মূলত ভাঙ্গারির ব্যবসা করি। মাদক ব্যবসার সাথে আমার জড়িত থাকার অভিযোগটি মিথ্যা এবং বানোয়াট। এ বিষয়ে শ্রমিকদল শিল্পাঞ্চল কমিটির শ্রীপুর উপজেলার শাখার সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতি কাজল ফকির বলেন, আমি যতটুকু জানি রিয়ালের মাদকের সাথে সংশ্লিষ্টতা অভিযোগটি সত্য নয়। তার সাথে বিভিন্ন মানুষের শত্রুতা থাকতে পারে। শত্রুতাবশত এমন অভিযোগ উঠে থাকতে পারে। তবে মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকলে তাকে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে শ্রীপুর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল বেপারী বলেন, শ্রীপুরে মাদকের ছড়াছড়ি অনেকটা বেড়ে গেছে। মাদক ব্যবসার সাথে যারাই সংশ্লিষ্ট রয়েছে, তারা দেশ ও জনগণের শত্রু। তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।
Discussion about this post