নিজস্ব প্রতিবেদক : বলা হয় বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠন থেকে কোন কর্মীকে বিএনপি’তে ও তার অঙ্গ সংগঠনে অনুপ্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। কিন্তু উত্তরার, উত্তর খানের মারুফ ইসলাম শাকিল এর বিষয়টি যেন পুরো উল্টো, ছাত্রলীগের উত্তর খানের ৪৪ নং ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক বর্তমানে বিএনপির অঙ্গ সংগঠন যুবদল নেতা। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে যখন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পরিণত হলো,তখন ছাত্রলীগের অবস্থানটি গণমাধ্যমের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই পরিষ্কার হয়েছে, যে কোন মঞ্চে বিএনপি শীর্ষ স্থানীয় নেতারা ছাত্রলীগ নিয়ে কটুক্তি মূলক কথা সবসময় বলে থাকে। তাই প্রশ্ন আসে যুবদল কি করে শাকিলকে উত্তরখান থানা সহ সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচিত করে। উত্তরখান থানার আওতাধীন এলাকা ৪৪ নং ওয়ার্ডের এনামুল বলেন, শাকিল আওয়ামী লীগের আমলে যেভাবে অত্যাচার করতো এলাকার মানুষকে ঠিক একইভাবে বর্তমানে করছে। শাকিল এর কোন কিছুই পরিবর্তন হয় নাই, হয়েছে শুধু দল পরিবর্তন। এখন নাকি সে বিএনপির অনেক বড় নেতা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একই এলাকার অন্য এক ব্যক্তি বলেন, শাকিল এর বিরুদ্ধে উত্তরখান থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। মাদক, চাঁদাবাজী ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে তার দুরত্ব অনেক দূর। তবে শাকিল এর বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গেলে বেরিয়ে আসে, উত্তরখান থানায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা রয়েছে। এবং ২০১৭ সালে তার বিরুদ্ধে একটি মাদক মামলা রয়েছে। অনুসন্ধান করে আরো দেখা যায় যে, বিভিন্ন স্থানে মারামারি,দখলবাজি, চাঁদাবাজি এই মারুফ এর মাধ্যমেই হয়। উত্তরখানে মারুফের মাধ্যমে কিশোর গ্যাং পরিচালিত হয়। সাবেক সাধারণ সম্পাদক উত্তরখান থানা যুবদল এনামুল বলেন, কিভাবে কেমন করে শাকিল আমাদের দলে তা আমার জানা নেই, আমি তো দলের নীতি নির্ধারক নই সামান্য একজন কর্মী। দল যখন যা সিদ্ধান্ত নেয় আমি মনে করি সেটাই সঠিক। তবে বেশ কিছুদিন যাবত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে শাকিলের ছাত্রলীগ করাটা পরিষ্কার হয়েছে। তার পাশাপাশি অনেক কিছুই দেখতে পাচ্ছি আমার মত নিশ্চয়ই দলের নীতি-নির্ধারকরা তা দেখে, তাই খুব শীঘ্রই এই বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত হবে বলে আমি মনে করি। উত্তর খানের প্রবীণ ব্যক্তিত্ব হাজী খন্দকার সাজ্জাদ বলেন, শাকিল এলাকায় চাঁদাবাজির নেতৃত্ব দেয়, কোন কিছু হলেই সে আর তার সাঙ্গোপাঙ্গ একসাথে চলে আসে, এলাকার সবাই জানে শাকিল নিয়মিত ইয়াবা সেবন করে এবং ইয়াবার ব্যবসা করে। উত্তর খানে তার নামে মামলা আছে মামলা নাম্বার :জী আর ০৮/১৭। আগে আওয়ামী লীগের পরিচয়ে চলতো থানা পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করত এবং ছাত্রলীগের অনেক বড় নেতা নাকি ছিল। এখন শুনি বিএনপির নাকি অনেক বড় মাপের নেতা সে। উল্লেখ্য যে মারুফ হাসান শাকিল এর নামে বিভিন্ন ব্যক্তি থেকে বিভিন্ন কাজের কথা বলে অর্থ আত্মসাত এর একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এক ভিডিও ফুটেজ দ্বারা স্বপন নামের এক ব্যক্তি অভিযোগ তুলে যে, এক বিবাহিত নারীকে অপহরণের চেষ্টা করে এই শাকিল, এবং এলাকাবাসীর সবাই মিলে তাকে প্রতিহত করে ওই নারীকে রক্ষা করা হয়। আরো অভিযোগ ওঠে অর্থের বিনিময়ে শাকিল যে কোন ধরনের কাজের দায়িত্ব নিয়ে থাকে, কারোর বাড়ি খালি করে দেওয়া, দোকান দখল করে দেওয়া, জায়গা দখল করে দেওয়া, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে নিজের প্রভাব প্রতিপত্তি বিস্তার করা, যেকোনো কনস্ট্রাকশন সাইডে নিজ ক্ষমতা বলে বালু সাপ্লাই দেওয়া, ছোটখাটো কারখানাতে মাসিক ভিত্তিক মাসোহারা আদায় করা। উত্তর খানের সাধারণ মানুষের প্রশ্ন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যে শাকিল বিরোধিতা করে এসেছে সে কি করে বিএনপির যুবদলের রাজনীতির সাথে যুক্ত হতে পারে। কি করে সে যুবদলের নেতা হয়। এ বিষয়ে উত্তর মহানগর যুবদলের এর সদস্য সচিব এর সাথে মুঠো ফোনে তার বিদেশি নাম্বারে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয় কিন্তু তিনি ফোনটি ধরেননি। বহুবিবাহ কারী এই শাকিল তার চার স্ত্রীর মধ্যে দুই স্ত্রীর সাথে বর্তমানে থাকেন। তবে এলাকাবাসীর মতে প্রায় তার স্ত্রী পরিবর্তন হয়ে থাকে। ইতিমধ্যেই ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের পক্ষ থেকে মারুফ হাসান শাকিলকে দলীয় শৃঙ্খলা পরিবহন্থী কাজের জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে। উত্তরখান থানার সাধারণ জনগণ ও বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বিশ্বাস এবার মারুফ হাসান শাকিল এর বিরুদ্ধে দল অবশ্যই কঠিন শাস্তির সিদ্ধান্ত নিবে।
Discussion about this post