ক্রীড়া ডেস্ক :: দ্বিতীয় ম্যাচের মতো শেষ ম্যাচেও নিজেদের কাজটা ঠিকমতো করলেন পাকিস্তানি পেসাররা। অস্ট্রেলিয়ার সর্বনিম্ন রানের রেকর্ডটা নামিয়ে আনেন আরও নিচে। যা পাড়ি দিতে তেমন কোনো অসুবিধাই হয়নি ব্যাটারদের। পেসারদের নিয়ে এই সিরিজের আগে সমালোচনা কম হয়নি। ঘরের মাঠেই মেলে ধরতে পারছিলেন না তারা। অথচ সেই পেসারদের হাত ধরেই ২২ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ (২-১ ব্যবধানে) জিতল পাকিস্তান। পার্থে সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে ৮ উইকেটের জয় পেয়েছে সফরকারীরা।
সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ হলেও আগে থেকেই অস্ট্রেলিয়ার পরিকল্পনা ছিল দ্বিতীয় সারির একাদশ সাজানোর। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই পেসারদের তোপের মুখে পড়ে। পাকিস্তান অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান কোনো স্পিনারই আনেননি আক্রমণে। অবশ্য প্রতিটি ম্যাচেই তার মূল বোলার ছিলেন চার পেসারই। বাকি কোটা পূরণের দায়িত্ব ছিল আগা সালমান ও সাইম আইয়ুবের ওপর। আজ অবশ্য তাদের প্রয়োজনই লাগেনি। শাহিন আফ্রিদি, নাসিম শাহ, মোহাম্মদ হাসনাইন ও হারিস রউফ মিলেই নিয়েছেন ৯ উইকেট। এর মধ্যে তিনটি করে নেন শাহিন ও নাসিম।
কেবল ২৪ রানে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন হারিস রউফ। প্রথমে তিনি সাজঘরে ফেরান ওপেনার ম্যাথু শর্ট। এরপর গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে রানের খাতাই খুলতে দেননি তিনি। এনিয়ে সিরিজের তিন ম্যাচেই তার শিকারে পরিণত হলেন ম্যাক্সওয়েল। স্বাগতিকদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন শন অ্যাবট। ২২ রান আসে ওপেনার জ্যাক ফ্রেজার-ম্যাকগার্কের ব্যাট থেকে। নাসিমের বলে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার পর আর ব্যাট করতে নামেনননি কুপার কনোলি। যার ফলে ১৪০ রানেই গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। পাকিস্তানের বিপক্ষে এটি তাদের সর্বনিম্ন সংগ্রহ।
তাড়া করতে নেমে গত ম্যাচের মতোই পাকিস্তানকে দারুণ শুরু এনে দেন সাইম আইয়ুব ও আব্দুল্লাহ শফিক। ৮৪ রানের এই উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন ল্যান্স মরিস। ১৭তম ওভারের প্রথম বলে নিজেই ক্যাচ নিয়ে সাজঘরে ফেরান ৩৭ রান করা শফিককে। একই ওভারের শেষ বলে সাইমের স্টাম্প ছত্রখান করে দেন ডানহাতি এই পেসার। ৫২ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৪২ রানে আউট হন সাইম। বাকিটা পথ অবশ্য নির্বিঘ্নেই কাটিয়ে দেন বাবর আজম (২৮) ও মোহাম্মদ রিজওয়ান (৩০)। ১৩৯ বল হাতে রেখে ম্যাচ ও সিরিজ জয় নিশ্চিত করেন তারা।
সবশেষ ২০০২ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ (২-১ ব্যবধানে) জিতেছিল পাকিস্তান। সেবার অজি পেস অ্যাটাকের অন্যতম সদস্য ছিলেন জেসন গিলেস্পি, আর এবার তিনি পাকিস্তানের হেড কোচ। তাই সিরিজ জয়ের স্বাদটি তার জন্য অম্ল-মধুর বলা যায়!
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া: ১৪০/১০ (অ্যাবট ৩০, শর্ট ২২; শাহিন ৩/৩২, নাসিম ৩/৫৪, রউফ ২/২৪)।
পাকিস্তান: ১৪৩/২ (সাইম ৪২, শফিক ৩৭, বাবর ২৮*, রিজওয়ান ৩০*; মরিস২/২৪)।
ফল: পাকিস্তান ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: হারিস রউফ।
সিরিজ: পাকিস্তান ২-১ ব্যবধানে জয়ী।
সিরিজসেরা: হারিস রউফ (১০ উইকেট)।
Discussion about this post