স্টাফ রিপোার্টারঃ গণ অভ্যুত্থানে পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের একজন সক্রীয় কর্মী রাতারাতি ভোল পাল্টিয়ে এখন বিএনপি’র ছায়াতলে এসে নিজেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম দলের নেতা পরিচয় দিয়ে এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন এবং নিজেকে বিএনপি’র কর্মী পরিচয় দিয়ে এলাকায় পুরোদমে চাঁদাবাজি ও জোরপূর্বক ব্যবসা দখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সে দীর্ঘদিন আওয়ামীলীগ করে হঠাৎ বিএনপি’র পরিচয় দিয়ে এমন কর্মকান্ডে ২৭নং ওয়ার্ড বিএনপি তথা অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জোরপূর্বক ইন্টারনেটের ব্যবসা দখল করার অপরাধে গাজীপুর আদালতে একটি সিআর মামলা দায়ের হয়েছে তার বিরুদ্ধে। যার নং-১৪৮৮, মামলাটি তদন্তের জন্য গাজীপুর পিবিআই-কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন গাজীপুর মহানগর আদালত। মামলার এজহার সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর মহানগরের লক্ষীপুরা এলাকার মৃত মতি আহম্মেদের ছেলে রিপন আহম্মেদ(৩৫), মিজান আহম্মেদ(৪২) এবং হারুনের পুত্র যুবলীগ নেতা মিনহাজুল আবেদীন কনক তারা দীর্ঘদিন যাবৎ আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। সেই প্রভাবে উল্লেখিত আসামীরা একই এলাকার জুলহাস শেখের স্ত্রী তাহমিনা বেগম(৪৪) এর নিকটে বিভিন্ন সময় বিগত ২১/০৩/২৪, ২১/০৬/২৩, ২১/০৭/২৪ তারিখে এসে বিভিন্ন মারফতে তাহমিনার কাছে ২’লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে উল্লেখিত আসামীরা তাহমিনাকে অকথ্য ভাষায় গাল-মন্দ করতে থাকে এবং তাদের কাছে থাকা দেশীয় অস্ত্র বাহির করে তাহমিনাকে হত্যার প্রস্তুতি নেয়। এসময় তাহমিনা প্রান বাঁচাতে নগদ ১’লক্ষ টাকা দেয়, পরবর্তীতে আরও ১’লক্ষ টাকা রেডি রাখার জন্য সময় দিয়ে শাসিয়ে যায় এবং টাকা না দিলে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করবে বলে হুমকী প্রদান করে চলে আসে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৬/০৩/২৪ইং তারিখে তাদের পরিচিত এক পুলিশ অফিসারের মাধ্যমে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাহমিনাকে ধরিয়ে দেয়। এতেই ক্ষ্যান্ত হয়নি উক্ত নামধারী গং, আবার ২১/০৬/২৪ইং তারিখ বিকালে তাহমিনার বাড়িতে উল্লেখিত আসামীরা প্রবেশ করে দাবীকৃত পরবর্তী ১’লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। তাহমিনার মেয়েরা উল্লেখিত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাদের সাথে আসামীরা খারাপ আচরন করে। এসময় তাহমিনার ছেলে-মেয়েরা প্রানভয়ে পার্শ্ববর্তী তার বোনের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এসময় আসামীগণ তাহমিনার বাড়িতে থাকা ১টি টিভি, ১ টন রড, ২টি ছাগল (যার আনুমানিক মূল্য’২’লক্ষ টাকা) লুট করে নিয়ে যায়। এতেও ক্ষ্যান্ত হয়নি উল্লেখিত আসামীরা। পরবর্তীতে ২১/০৭/২৪ইং তারিখ রোজ রবিবার বিকাল ৫ ঘটিকার সময় তাহমিনার ছেলে মোঃ জুয়েল রানার ইন্টারনেট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে পুনরায় জুয়েল রানার নিকট দাবীকৃত ১’লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আসামীরা জুয়েলকে মারপিট করে তাহার ইন্টারনেট ব্যবসা বন্ধ করে দেয় এবং তাদের দখলে নিয়ে নেয়। সেই সাথে জুয়েলকে এই বিষয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করে। বাড়াবাড়ি করলে তোর মায়ের মত মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলহাজতে পাঠিয়ে দিব বলে হুমকী-ধামকী প্রদান করে মামলাতে তাহমিনা উল্লেখ করেছেন। এদিকে উক্ত গং দীর্ঘদিন আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার পর হঠাৎ বিএনপি’র ছায়াতলে এসে এলাকার নীরিহ জনগণকে বিভিন্ন রকম হুমকী-ধামকী প্রদান করছে বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী। উল্লেখিত বিষয়ে মোঃ মিজান আহম্মেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমেই বলেন, আমি কোনো রাজনীতিক দলের সাথে জড়িত না, অথচ বিগত দিনে তার সাথে আওয়ামীদলীয় ঘরনার সখ্যতার কিছু প্রমানপত্র সহ, বর্তমান গাজীপুর মহানগর বিএনপি’র প্রভাবশালী নেতাদের সাথে উঠাবসার প্রমানাদিও দৈনিক আমাদের সংবাদ পত্রিকার হাতে এসে পৌঁছেছে। এদিকে মোঃ মিজান আহম্মেদ পুনরায় বলেন, আমি কখনই আওয়ামীলীগ করিনি, আমি বর্তমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম দলের একজন সক্রীয় নেতা। হঠাৎ এভাবে ভোল পাল্টানো সুরে আওয়ামীলীগ থেকে এসে বিএনপি’র পরিচয় দিয়ে তাদের এহেন নানাধরনের অপকর্মের জন্য ২৭নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতাকর্মীরাসহ লক্ষীপুরা এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে তীব্র সমালোচনা।
Discussion about this post