সাগর খান টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে সোহাগপাড়া এলাকায় একজন হত্যা মামলার আসামী এবং অপরজন উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এই দুই আওয়ামীলীগ নেতাকে অনুষ্ঠানে অতিথি করায় দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্ধ ও সংঘর্ষের আশংকায় দুই দিন ব্যাপি ওয়াজ ও দোয়া মাহফিল বন্ধ করে দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন এবং পুলিশ। আজ শুক্রবার এবং আগামীকাল শনিবার ওয়াজ ও দোয়া মহাফিল হওয়ার কথা ছিল। শেষ মুহর্তে এসে সভা পন্ড হওয়ায় এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসুল্লি এবং দুই গ্রুপের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সোহাগপাড়া এলাকায় খোঁজ নিয়ে ও মুসুল্লিদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। সোহাগপাড়া এলাকার মুসুল্লিগন জানান, সোহাগপাড়া বাজার জামে মসজিদ ও মাদ্রাসাতুত ত্বাকওয়ার উদ্যোগে প্রতি বছর ওয়াজ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় এ বছর এলাকার মুসুল্লিগন ২৫ ও ২৬ অক্টোবর রোজ শুক্রবার ও শনিবার ওয়াজ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন। মাহফিলের প্রথম দিন দবির উদ্দিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি করা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবু হানিফকে। প্রধান বক্তা করা হয় ক্বারী শুয়াইব আহম্মেদ আশরাফীকে এবং দ্বিতীয় বক্তা করা হয় মুফফতি মুতাসিম বিল্লাহ আতিকীকে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি করা হয় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক খন্দকার আনোয়ার পারভেজ শাহআলম এবং সহিদুর রহমানসহ আরও ১০-১২ জনকে। দ্বিতীয় দিন আবুল হাসেমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি করা হয় উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা মীর এনায়েত হোসেন মন্টুকে। প্রধান বক্তা করা হয় মুফতি হেদায়েত উল্লাহ আজাদীকে এবং দ্বিতীয় বক্তা করা হয় নুরুল আমীন আল ফরিদীকে। বিশেষ অতিথি করা হয় ১০ নং গোড়াই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং কোটা সংস্কার ষৈম্যবিরোধী আন্দোলনের কলেজ ছাত্র ইমন হত্যা মামলার আসামী আলহাজ¦ হুমায়ুন কবীরকে। এছাড়া অনুষ্ঠানে আবুল হাসেম ও সোহরাব হোসেন বাদশাসহ ১০-১২ জনকে অতিথি করা হয়। এদিকে ওয়াজ মাহফিলে হত্যা মামলার আসামী এবং উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যানসহ আওয়ামীলীগ নেতাদের নাম দিয়ে অতিথি ও পোষ্টার করায় এলাকায় বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমিকদলসহ সাধারন লোকজনের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। অনুস্ঠান বন্ধ রাখার জন্য এলাকার পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং মির্জাপুর থানার ওসি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। অভিযোগ আসায় ওসি ও ইউএনও এায়াজক কমিটির সদস্যদের ঢেকে এনে অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্ধ এবং সংঘর্ষের আশংকায় উপজেলা প্রশাসন এবং পুলিশ গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে দুই দিন ব্যাপি ওয়াজ ও দোয়া মাহফিল বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। ফলে পন্ড হয়ে যায় ওয়াজ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠান। এ ব্যাপারে সোহাগপাড়া বাজার জামে মসজিদ ও মাদ্রাসাতুত ত্বাকওয়ার সভাপতি মো. ফারুক হোসেন সিকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ওয়াজ ও দোয়া মাহফিলে অতিথি নিয়ে দ্বন্ধ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসির) নিকট এলাকার কিছু লোকজন লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলার যাতে কোন অবনতি না ঘটে সে জন্য প্রশাসন ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করার নির্দেশ নিয়েছেন। এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোশারফ হোসেন বলেন, ওয়াজ ও দোয়া মাহফিল নিয়ে এলাকার পক্ষ থেকে অভিযোগ আসায় আয়োজক কমিটির সঙ্গে কথা বলে ওয়াজ মাহফিল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।
Discussion about this post