নিজস্ব প্রতিবেদক :: মোঃ আনোয়ার হোসেন নির্মম নির্যাতন সইতে না পেরে স্বামীর বিরুদ্ধে গৃহবধূ আখি আক্তার যৌতুকের মামলা দায়ের করে উল্টো হয়রানীর শিকার হচ্ছেন। স্বামী প্রভাবশালী হওয়ায় কোনো প্রতিকার মিলছে না, বরং মিথ্যা ঘটনায় পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে কারাগারে অসহায় ওই গৃহবধুর বাবা ও ভগ্নিপতি। নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম থানার এক এসআই ও গাজীপুরের এক এএসআই এর বিরুদ্ধে আইজিপি বরাবরে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী গৃহবধূ।
গাজীপুর মহানগরীর সদর থানার বাহাদুরপুর এলাকার মোঃ শওকত আলীর ছেলে আসিফ মিয়ার (২৬) সঙ্গে ২০২১ সালের ১২ অক্টোবর ঐ এলাকার মোঃ আলী হোসেনের মেয়ে মোছাঃ আঁখি আক্তারের (২২) বিয়ে হয়। এরপর তাদের একটি মেয়ে সন্তান হয়। সন্তান হবার পর থেকে স্বামী যৌতুকের দাবীসহ নানা অজুহাতে আঁখিকে নির্যাতন শুরু করে। বিয়ের সময় কন্যার পিতা আনুমানিক ৩ লাখ টাকা মূল্যের দুই ভরি স্বর্ণালংকার ও আসবাবপত্র উপঢৌকন হিসেবে জামাতাকে প্রদান করে। কিন্তু এতেও সন্তুষ্ট হতে না পেরে যৌতুক হিসেবে আরও তিন লাখ টাকা দাবী করেন। স্বামী আসিফের দাবীকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করলে ভুক্তভোগী আঁখিকে গত ২০২৩ সালের ৫ মে সকাল ১০ টায় শারীরিক নির্যাতন করে বের করে দেয়। এ ঘটনায় গত ২০২৩ সালের ০৭ জুন ভুক্তভোগী আঁখি বাদী হয়ে গাজীপুরের চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় ৫৯৩/২৪ নং সিআর মামলা দায়ের করেন। আদালত স্বামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা (ওয়ারেন্ট) জারি করেন।
ভুক্তভোগী জানান, উনি যৌতুক মামলা দায়ের করার পর তার স্বামী কোন না কোনো ভাবে জানতে পারে। তারপর তার চাচা নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম থানার নাজিরপুর এলাকার সামাদ মুন্সির ছেলে মোঃ আরশেদ আলীকে বাদী করে কৌশল করে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে ভুক্তভোগীর বাবা ও ভগ্নিপতি কুরবান আলীর বিরুদ্ধে নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম আমলী আদালতে দন্ডবিধির ৪০৬/৪২০/৩২৩/৫০৬/১০৯ ধারায় ২৭১/২৩ নং সিআর মামলা দায়ের করে। এই মামলায় আদালত বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে তদন্তের নির্দেশ দেয়। এ মামলায় তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই রবিউল ইসলাম তদন্ত করাকালে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর থানার এএসআই জহিরুলের মাধ্যমে উৎকোচ দাবি করে। পুলিশের দাবি পূরণ না করায় পুলিশ যাচাই-বাছাই না করে মিথ্যা ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন কোর্টে দাখিল করে। এরপর ভুক্তভোগী আঁখির বাবা ও ভগ্নিপতি গত রবিবার (২০ অক্টোবর) সকালে নাটোরের বড়াইগ্রাম থানা আমলী আদালতে হাজির হয়। আদালত পুলিশের এই প্রতিবেদনের কারণে আখির বাবা ও ভগ্নিপতিকে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে ভুক্তভোগী বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি বরাবরে এসআই রবিউল ও এএসআই জহিরুলের বিরুদ্ধে ১১৪ নং অভিযোগ দায়ের করে। বর্তমানে উনার পরিবার মিথ্যা মামলা ও প্রাণ সংশয়ে দিন কাটাচ্ছে।
এব্যাপারে তিনি ন্যায়বিচারের জন্য সকলের কাছে সহায়তা চেয়েছেন। এবিষয়ে নাটোরের বড়াইগ্রাম থানার এসআই রবিউল ইসলাম জানান, এমামলায় ৪ লাখ টাকা আত্মসাতের কোন ডকুমেন্ট পাওয়া যায় নাই। স্বাক্ষীদের জবানবন্দী অনুযায়ী তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। এই মামলার ১ স্বাক্ষী বাদীর ভাতিজার বিরুদ্ধে গাজীপুর আদালতে ভুক্তভোগী আখির দায়ের করা যৌতুকের মামলার বিষয়ে উনি জানেন না। আসামী আলী হোসেনের মেয়ের সাথে কথা বলেছেন। স্বাক্ষীদের এই মামলায় আদালতে জেরা করলে মামালা টিকবে না। এসংক্রান্তে নাটোর জেলার পুলিশ সুপার মোঃ মারুফাত হুসাইন জানান, এ মামলায় কোন অনিয়ম হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Discussion about this post