নিজস্ব প্রতিবেদক :: ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনতে পুলিশের সঙ্গে কাজ করতে ৩০০ শিক্ষার্থীকে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত করা হয়েছে। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। তাদের সম্মানীও দেওয়া হবে। সোমবার দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে ‘ডিএমপির ট্রাফিক পক্ষ-২০২৪’ উদ্বোধনের সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এসব তথ্য জানান।
বর্তমানে প্রায় ২ কোটিরও বেশি লোক ঢাকায় বসবাস করে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ঢাকার রাস্তাগুলো অপ্রতুল হওয়ায় যানবাহনের ধারণক্ষমতা বহন করতে হিমশিম খাচ্ছে। ঢাকায় যে পরিমাণ রাস্তা থাকা দরকার বাস্তবে তা নেই। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে মানুষের ঢাকামুখিতা কমানো যাচ্ছে না।
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, অবকাঠামো বৃদ্ধি পেলেও পরিবহণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ণ উল্লেখযোগ্যভাবে হয়নি। মূল সড়কে জনগণের জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে আরামদায়ক যানবাহন উল্লেখযোগ্যভাবে দেওয়া সম্ভব হয়নি।
লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও বলেন, একই সড়কে রিকশা, ঠেলাগাড়িসহ অসংখ্য যানবাহন চলাচল করে। মানুষ তার প্রয়োজনে এসব যানবাহনের দ্বারস্থ হচ্ছেন। ফলে ঢাকা মহানগরীতে সুশৃঙ্খল ট্রাফিক ব্যবস্থা বাস্তবায়ন কঠিন হচ্ছে। অপরদিকে সময়ে সময়ে বিভিন্ন দাবি দাওয়ার কারণে সড়কে শৃঙ্খলা ভেঙে যাচ্ছে এবং বৈধ-অবৈধ যানবাহনের আধিক্যের কারণে যানজট দিন দিন অসহনীয় পর্যায়ে চলে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ফ্যাসিবাদ সরকারের পতনের পর ঢাকাসহ সারা দেশের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়ার কথা উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, দেশের জনসাধারণের কথা বিবেচনা করে ছাত্ররা স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে সড়কে ট্রাফিক দায়িত্ব পালন করে শৃঙ্খলা বজায় রাখে। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাকে সম্পৃক্ত করে ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নয়নে বর্তমান কাজ করছে সরকার। শুধু সরকার কিংবা পুলিশের মাধ্যমে কাজ করে ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থার আশানুরূপ উন্নয়ন সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন নগরে বসবাসকারী প্রতিটি নাগরিকের সস্পৃক্তকরণ।
ট্রাফিক শৃঙ্খলা কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে আনার জন্য ছাত্র-জনতাসহ নগরের জনসাধারণকে সচেতন ও সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে ট্রাফিক শৃঙ্খলা উন্নয়ন সম্ভব। এ লক্ষ্য সামনে রেখে ডিএমপি ২১ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত পক্ষকালব্যাপী একটি কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল হাসান বলেন, ঢাকার অন্যতম সমস্যা যানজট। সড়কে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কতগুলো মৌলিক বিষয় রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- ট্রাফিক অ্যাডুকেশন, ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ট্রাফিক এনভায়রমেন্ট ও ট্রাফিক এনফোর্সমেন্ট। সবগুলো সিস্টেম একত্রে কাজ করলে ট্রাফিকে শৃঙ্খলা আনা সম্ভব।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ, আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম প্রমুখ। ট্রাফিক পক্ষ উদ্বোধন উপলক্ষ্যে একটি র্যালি রাজারবাগ ও আশপাশের এলাকা প্রদক্ষিণ করে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে এসে শেষ হয়। ২১ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ডিএমপির ‘ট্রাফিক পক্ষে’র কার্যক্রম চলমান থাকবে।
Discussion about this post