গণহত্যা করে পলাতক শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে হিন্দুত্ববাদী ভারত। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটি যাতে অংশ নিতে পারে এবং আনুপাতিক ভোটের মাধ্যমে সংসদে আসন পেতে পারে সে ছক এঁকেই এ প্রকল্প নেয়া হয়েছে। প্রকল্প হচ্ছে ‘আনুপাতিক নির্বাচন’। আনুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে ক্রম অধিকারসম্পন্ন প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে। এরপর সারা দেশব্যাপী যে রাজনৈতিক দল যত শতাংশ ভোট পায়, সংসদে তত শতাংশ আসন পায়। এ লক্ষ্যে এদেশীয় ভারতীয় এজেন্ট সংগঠন, রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা সেমিনার সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে জনমত গড়ার চেষ্টায় নেমেছেন। তারা শেয়ালের মতো একই সুরে হুক্কাহুয়া দেয়া শুরু করেছে। সভা-সেমিনার এবং আওয়ামী লীগের তাবেদার গণমাধ্যমে প্রচারণার মাধ্যমে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনকে দিয়ে নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার করতে চাচ্ছে। এটা হলে তিনশ’ আসনের প্রাপ্ত ভোট অনুযায়ী সংসদে আনুপাতিক হারে প্রতিনিধিত্ব করতে আসন বণ্টন আইন করা হবে। জামায়াত ইতোমধ্যেই ভারতের এই আওয়ামী লীগ পুনর্বাসন প্রকল্পের ফাঁদে পা দিয়েছে। দলটি মনে করে একটি কল্যাণ ও আদর্শ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আনুপাতিক হারে করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার হওয়ার মতো ভোট পান না এমন বাম দলের নেতারাও তিনশ’ আসনে প্রার্থী দিয়ে দু’একটি আসনের লোভে ভারতীয় ডিজাইনের নির্বাচন কমিশন সংস্কারের পক্ষে। অবশ্য ইসলামী ধারার দলগুলো তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেনি। তবে বিএনপি এবং জাতীয়তাবাদী ধারার দলগুলো ভারতীয় নীল নকশা ধরে ফেলে ‘আনুপাতিক হারে সংসদে আসন বণ্টন’ কৌশলের বিরোধিতা করছে। বিএনপি মনে করে ক্ষমতাচ্যুত হাসিনার দলীয় নেতাকর্মীদের বিপদে ফেলে দিল্লি পালানোর মধ্যদিয়ে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মৃত্যু ঘটেছে। সেই আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতেই নির্বাচন ব্যবস্থায় এমন সংস্কার আনার বিষয় নিয়ে কথা উঠাচ্ছেন তাবেদাররা।
জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. নুরুল আমিন ব্যাপারী আমাদের সংবাদকে বলেন, সংসদে ভোটের আনুপাতিক হারে প্রতিনিধিত্ব করার প্রচারণা ভারতের নীল নকশা কিনা সে তথ্য আমার হাতে নেই। তবে গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি আওয়ামী লীগকে ফের ক্ষমতায় আনা ও পুনর্বাসনে যা যা করা প্রয়োজন ভারত তাই করবে। দিল্লির থিঙ্কট্যাঙ্করা আওয়ামী লীগকে যে কোনো উপায়ে ক্ষমতায় বসানোর কৌশল গ্রহণের পরামর্শ মোদিকে দিয়েছে। তবে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোকে এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। ভোটের সংখ্যানুপাতে জনপ্রতিনিধি করা হলে হিন্দুরা তাদের সংখ্যানুপাতে আসন চাইবে, অন্যান্যরাও সেটা চাইবে এবং ভোটের পর সরকার গঠনে এমপি বেচাকেনার হাট বসবে। বাংলাদেশ ওয়েষ্টার্ন কান্ট্রি নয়। আমাদের সামাজিক ব্যবস্থাপনা এবং রাজনৈতিক দলের অবস্থা বিবেচনা করেই জবাবদিহিতা ও টাকার খেলা বন্ধ করে আগের পদ্ধতিতে নির্বাচন ব্যবস্থা রাখতে হবে।
কয়েক বছর আগে নেপালের পার্লামেন্টে সংবিধান সংশোধন করার সময় পর্দার আড়াল থেকে প্রভাব খাটাতে গিয়ে নাকানিচুবানি খেয়েছে ভারত। এখন বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশন সংস্কারে পর্দার আড়াল থেকে গণবিচ্ছিন্ন এবং গণহত্যাকারী দল আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চায়। অথচ যারা এটা বাংলাদেশে করতে চাচ্ছে সেই ভারতের নির্বাচনে ভোটের সংখ্যানুপাতে সংসদে আসন বণ্টন হয় না। ভারতে সংখ্যানুপাতে লোকসভা ও বিধান সভায় আসন বণ্টন করা হলে মুসলমানরা বিপুল সংখ্যক আসন পেয়ে যাবে। শেখ হাসিনা ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচন করে টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। তিনি এক সময় বলেছিলেন, ‘ভারতকে যা দিয়েছি সারাজীবন মনে রাখবে’। হাসিনা সত্যি কথাই বলেছিলেন। নিজেদের স্বার্থে ভারত হাসিনাকে ফের বাংলাদেশে পুনর্বাসনে একের পর এক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
জানতে চাইলে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ সভাপতি রাশেদ প্রধান বলেন, হিন্দুত্ববাদী ভারতের কোনো চক্রান্তই সফল হতে দেয়া হবে না। শেখ হাসিনা গণহত্যা করে ভারতে পালিয়ে থেকে দিল্লির সঙ্গে শলাপরামর্শ করে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে তোলার অপচেষ্টা করছেন। তাকে কোনো ভাবেই এদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসন হতে দেয়া হবে না। যারা ভোটের আনুপাতিক হারে সংসদে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের কথা বলছেন তারা কার্যত হাসিনাকে পুনর্বাসনের পথ করে দেয়ার চেষ্টা করছেন। আওয়ামী লীগ বিতাড়িত। গণহত্যার অপরাধে দলটির বিচার হবে। ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে তারা লাখ লাখ কোটি টাকা লুট করেছে। সেখানে আওয়ামী লীগ যদি সারাদেশে শতকরা ১০ শতাংশ ভোট পায় তাহলে সংসদে তাদের ৩০ আসন দিতে হবে। মহিলা আসনসহ এ সংখ্যা হবে ৩৫। কেন গণহত্যাকারীদের পুনর্বাসন করতে হবে? হিন্দুত্ববাদী ভারতের এ দেশীয় যে সেবাদাসরা এমন প্রস্তাব করছেন তাদের প্রতিহত করতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৯ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনসহ ৬টি কমিশন গঠনের ঘোষণা দেন। অতঃপর সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন গঠন করেন। কমিশন ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে। কিন্তু নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারকে দিয়ে ভারতের নীল নকশা অনুযায়ী আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে সংসদ নির্বাচনে ‘ভোটের সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধি’ পদ্ধতি আইন করানোর চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যেই আওয়ামী লীগ অনুগত কিছু গণমাধ্যমে এ নিয়ে প্রবন্ধ, নিবন্ধ ছাপা শুরু হয়ে গেছে। সভা-সেমিনারও করা হচ্ছে। হাসিনা পালানোর বাস্তবতা ভারত কল্পনাও করেনি। দিল্লিতে আশ্রয় দেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র শেখ হাসিনার ভিসা বাতিল করে দিয়েছে। যুক্তরাজ্য সে দেশে তাকে আশ্রয় দেবে না জানিয়ে দিয়েছে। আরো কয়েকটি দেশ তাকে জায়গা দেবে না বলে জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র দিল্লির কাছে জানতে চেয়েছে তারা শেখ হাসিনাকে কিভাবে রেখেছেন, কারণ তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট বাতিল হয়েছে এবং ভারতে বিনা ভিসায় ৪৫ দিন থাকার মেয়াদ উতরে গেছে। এ অবস্থায় ভারত হাসিনাকে টুরিস্টভিসা দিয়ে রেখেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্রাইব্যুনালে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলেই বাংলাদেশ সরকার হাসিনাকে ফেরত চাইবে। এ অবস্থায় ভারত চায় যে কোনো প্রক্রিয়ায় হোক হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠা। এ জন্যই হঠাৎ করে সংখ্যানুপাতিক হারে আসন ব্যবস্থার নির্বাচন পদ্ধতি ইস্যু তুলে ধরা হচ্ছে।
জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু আমাদের সংবাদকে বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন পদ্ধতি সেটেল্ড। জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে জনগণ ভোট দিয়ে যাকে নির্বাচিত করেন তিনি নির্বাচিত হন। সেটেল্ড ইস্যু নিয়ে গবেষণা করার সময় এটা নয়। ইউরোপের কিছু দেশে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা থাকলেও দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশে এমন পদ্ধতির নির্বাচন ব্যবস্থা নেই। যারা সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের অদ্ভুত চিন্তাভাবনা নিয়ে গবেষণা করছেন তাদের উচিত আরো ২০ বছর পর এমন চিন্তাভাবনা করা। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সংখ্যানুপাতিক হারে নির্বাচন ব্যবস্থা গ্রহণযোগ্য নয়।
হাসিনাকে পুনর্বাসনের চেষ্টায় ভারত জুডিশিয়াল ক্যু, আনসার দিয়ে সচিবালয় ঘেরাও, সংখ্যালঘু নির্যাতন, গার্মেন্টস সেক্টরে অস্থিরতা, পাহাড়ে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে নতুন পথ বেছে নেয়। গত ১২ অক্টোবর ঢাকায় দেশীয়রা এ সংক্রান্ত দু’টি সেমিনারের আয়োজন করে। নির্বাচন কমিশন বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি) ব্যানারে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কেমন চাই’ শীর্ষক সেমিনার হয়। আর সমাজ গবেষণা কেন্দ্র নামে একটি প্রতিষ্ঠান ‘রাষ্ট্র সংস্কার ও সংবিধান সংশোধনী’ শীর্ষক ভার্চুয়াল ওয়েবিনারের আয়োজন করে। দু’টির উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নির্বাচন পদ্ধতিতে সংস্কারের মাধ্যমে পতিত আওয়ামী লীগ পুনর্বাসন। ‘রাষ্ট্র সংস্কার ও সংবিধান সংশোধনী’ ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধে আনুপাতিক নির্বাচনের প্রবর্তনসহ ১১টি রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাব দেয়া হয়। দাবি করা হয়, বিশ্বের প্রায় ৭০টি দেশ আনুপাতিক নির্বাচনব্যবস্থা অনুসরণ করে। এই নির্বাচনব্যবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে ক্রম অধিকারসম্পন্ন প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে। এরপর সারা দেশব্যাপী যে রাজনৈতিক দল যত শতাংশ ভোট পায়, সংসদে তত শতাংশ আসন পায়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ডিস্টিংগুইশড ফেলো রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রওনক জাহান বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের যেসব প্রস্তাব এসেছে, বেশির ভাগই কাঠামোগত পরিবর্তন কিংবা কাঠামোর পরিবর্তন। এখানে স্বৈরতন্ত্রের উত্থান হয়েছে। আমরা যদি স্বৈরশাসনকে চেক দিতে চাই, তাহলে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী পন্থা হবে আনুপাতিক নির্বাচন। দেশের মানুষ এই পদ্ধতি নিয়ে অতটা ভালো জানে না। এই পদ্ধতির জন্য সাধারণ জনমত গড়ে তোলার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে কাজ করতে হবে।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান বলেন, নির্বাচন কমিশনে যে সংস্কারই করা হোক না কেন, সবকিছু নির্ভর করে তা সত্যিকারভাবে বাস্তবায়ন করার ওপর। আর তা কার্যকর করবে রাজনৈতিক দল, যারা পরবর্তী নির্বাচনে নির্বাচিত হবে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকলে বর্তমান ব্যবস্থায় নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ করা সম্ভব।
সিরডাপ মিলনায়তনে ‘নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কেমন চাই’ সেমিনারে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও অন্তর্বর্তী সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়কে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। তিনি প্রস্তাব করেন, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে সরাসরি ভোটে নারী আসনে নির্বাচন, প্রার্থীদের ব্যয় পর্যবেক্ষণে রাখার বিধান করা যেতে পারে।
সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স সংসদ সদস্য নির্বাচনের বিদ্যমান পদ্ধতি বাদ দিয়ে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি জরুরি বলে দাবি করেন। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে দ্রæত যাবেন কি না, এ জন্য কী কী করবেন, তা স্পষ্টভাবে বলা দরকার। তবে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে নির্বাচন করা সময়ের দাবি।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, বাস্তবতার নিরিখে যা সংস্কার করা দরকার, তাই করতে হবে। বিনা প্রতিদ্বিদ্বতায় ভোট হওয়া উচিত না। প্রয়োজনে সেখানে পুনরায় ভোট করতে হবে। শিক্ষকরা রাতের ভোটের সহযোগী ছিলেন। এক্ষেত্রে আমাদের স্কাউটদের গার্লস গাইডদের ব্যবহার করতে পারি। সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে তিন বছরের বাধ্যবাধকতা বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা উচিত। ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ও জামায়াতের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ডা. মু. শফিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনী সংস্কারে ৯টি পয়েন্ট স¤প্রতি সংবাদ সম্মেলনে আমরা তুলে ধরেছি। সংসদে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থাপনা প্রণয়ন। জামায়াতের প্রস্তাবনা তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে একটি কল্যাণ ও আদর্শ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আনুপাতিক বা সংখ্যানুপাতিক হারে করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সেমিনারে প্রথম আলোর সাংবাদিক সোহরাব হাসান বলেন, তত্তাবধায়ক সরকার রাখা জরুরি। নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের আইন নিয়ে প্রশ্ন আছে। বিদ্যমান পদ্ধতিতে নির্বাচন নাকি আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে ভোট হবে, সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্তে আসতে হবে। গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, আমি মনে করি সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে। স্থানীয় নির্বাচন নির্দলীয় করতে হবে। সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা করতে হবে। দল নিবন্ধন প্রথা সঠিক। তবে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির বিষয়টি নির্বাচন কমিশনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের এখতিয়ার নয়। এটি সংবিধানের বিষয়। সংবিধান সংস্কার কমিশন যদি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিলে তাঁদের কমিশন কিছু প্রস্তাব দেবে।
প্রাচীন ভারতের প্রখ্যাত দার্শনিক চাণক্য। চাণক্য নীতি অনুসরণ করেই ভারত লেন্দুপ দর্জিকে হাত করে ভোটের মাধ্যমেই সিকিমকে ভারতের অঙ্গরাজ্যে পরিণত করে। বাংলাদেশেও সেই নীতি গ্রহণ করে দিল্লি গণহত্যাকারী হাসিনার পক্ষ নিয়েছে। আওয়ামী লীগকে পুনঃপ্রতিষ্ঠায় নানা কৌশল করছে। এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনদের মধ্যে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। তাদের বক্তব্য ভারত নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলতে ব্যর্থ হয়ে এখন পর্দার আড়াল থেকে হাসিনাকে আগামী নির্বাচনে পুনর্বাসনের নামে দেশীয় এজেন্টদের দিয়ে ‘আনুপাতিক নির্বাচন’ দাবি উঠাচ্ছে। এই অপচেষ্টাতেও সফল হবে না।
Discussion about this post