উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও ভারি বৃষ্টিতে ফেনী ও কুমিল্লায় নজিরবিহীর বন্যার পর যে প্রশ্ন এখনও ঘুরপাক খাচ্ছে, সেটি হল, এই দুর্যোগ ও দুর্ভোগ কি কোনোভাবে কমানোর সুযোগ ছিল?
দেশের উত্তর পূর্ব ও পূর্বাঞ্চলে তৈরি হওয়া বন্যা মোকাবেলায় প্রস্তুতির ঘাটতি দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এই মাত্রার বন্যা হবে, সেই পূর্বাভাস পাওয়া কঠিন হলেও উজানে ভারতে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে, বন্যার ঝঁকি রয়েছে, এমন তথ্য বাংলাদেশের হাতে ছিল। কিন্তু তা জনগণের কাছে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়নি, প্রশাসনও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি।
দুর্যোগ ব্যব্স্থাপনা ও ত্রাণ সচিব দাবি করছেন, তারা উপদ্রুত এলাকা থেকে মানুষকে আগেভাগে সরিয়ে আনার চেষ্টা করেছেন, তবে মানুষ আসতে চায়নি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর দাবি করেছে, তাদের কাছে থাকা আগাম তথ্য তারা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছেন, কাজেই দায় তাদের না। তবে একজন পানি সম্পদ বিশেষজ্ঞ বলেছেন, আবহাওয়া অধিদপ্তর যে ভাষায় বার্তা দেয়, তা মানুষ বোঝে না। তার মতে, বার্তার ভাষাও পাল্টাতে হবে।
গত বুধবার ভারতের ত্রিপুরা থেকে ফেনী, কুমিল্লার দিকে ধেয়ে আসে প্রবল স্রোতধারা। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তলিয়ে যায় বিস্তীর্ণ জনপদ। এমন প্রবল বন্যায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র কী দায়িত্ব পালন করেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
তিনি বলেন, “আমরা জানতাম অগাস্ট মাসে ভারি বৃষ্টির আশঙ্কা আছে। কিন্তু সঠিক সময়টা তো সব সময় জানা যায় না। এক থেকে তিনদিন সময় পাওয়া যায় আকস্মিক বন্যার ক্ষেত্রে, সার্বিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রস্তুতির জন্য সময়টা আসলে কমই।
“আকস্মিক বন্যার ক্ষেত্রে সময় কম পাওয়ায় মোকাবেলার জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতির ঘাটতি ছিল।”
আবহাওয়া অধিদপ্তরের দায় কতটা- এই প্রশ্নে আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কোন এলাকায় ভারি বৃষ্টি হবে সে সতর্কবার্তা দেওয়ার পর বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র এই উপাত্তকে ব্যবহার করে বন্যার সম্ভাবনা নিয়ে পূর্বাভাস দেয়।
১৬ অগাস্ট ভারি বৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি হওয়ার পর সতর্কীকরণ কেন্দ্রকে সেটি জানানোর কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা ওয়েবসাইট, গণমাধ্যমসহ নানা মাধ্যমে যথাসময়ে ভারি বর্ষণের সতর্কবার্তা দিয়েছি। সুতরাং বন্যা মোকাবেলার ব্যর্থতার দায় আমাদের না।
“দুর্যোগের আগে, দুর্যোগের সময় এবং পরে কাজের যে মহাযজ্ঞ সেটা করার দায়িত্ব দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের। রুট লেভেলে পৌঁছানোর দায়িত্বও তাদের।”
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় কী করেছে- এই প্রশ্নে সচিব মো. কামরুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমক বলেন, “এটা তো আকস্মিক বন্যা; এতটা ভয়াবহ আগে কখনও হয়নি।
“তিন দিন আগে থেকেই মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু মানুষ নিজস্ব বাসস্থান ছাড়তে চায় না। কিছু এসেছে, তবে যাদের পাকা বাড়ি আছে তারা আসতে চায়নি।”
পূর্বাভাস আসলে কতটা বোধগম্য?
গত ১৮ অগাস্ট বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র তাদের বন্যার মধ্যমেয়াদি যে পূর্বাভাস দিয়েছিল, তাতে বলা হয়েছে, “দক্ষিণ-পূর্ব পাহাড়ি অববাহিকাভুক্ত দক্ষিণ-পূর্ব পার্বত্য অঞ্চলের নদীগুলোর পানি ২০ অগাস্ট পর্যন্ত সময় বিশেষে বাড়তে পারে। এরপর ২৩ অগাস্ট থেকে ২৮ অগাস্ট পর্যন্ত ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে অববাহিকার প্রধান নদীর পানি কিছু পয়েন্টে সময় বিশেষে স্বল্প মেয়াদে দ্রুত বাড়তে পারে।”
জলবায়ু পরিবর্তন ও নদী বিশেষজ্ঞ পানি সম্পদ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আইনূন নিশাত বলেন, এই ভাষায় পূর্বাভাস মানুষ বুঝতে পারে না। তিনি বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র ও আবহাওয়া অধিদপ্তরকে ভাষা পরিবর্তনের তাগিদ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “গত ৫০ বছর ধরে তারা একই ভাষায় লিখছে, কেউ শোনেও না। তবে মন দিয়ে শুনলে বোঝা যেত কী হচ্ছে। আমাকে লাল রঙ দেখালে বুঝতে পারব আমাকে কী করতে হবে। এখানে উন্নতি করার ব্যাপার আছে।”
বন্যায় দেশের ভেতরে কী করতে হবে, ভারতের সঙ্গে কী করতে হবে সেটা পর্যালোচনা করে ১০ দিনের মধ্যে একটা প্রতিবেদন তৈরি করে সে অনুযায়ী কাজ শুরুর পরামর্শ দিয়েছেন এই বিশেষজ্ঞ।
শঙ্কা আগেই ছিল, কী প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে?
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী উদয় রহমান বলেন, “প্রাকৃতিকভাবেই উজান থেকে বাংলাদেশে পানি নেমে আসে, এটা এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নাই। আমাদেরও প্রস্তুতিটা লাগবে, নিকট অতীতে এত বড় বন্যা হয়নি। সেক্ষেত্রে আমাদের প্রস্তুতি কিছুটা সীমিতই ছিল।”
বাংলাদেশ ও ভারতের পূর্বাঞ্চলে অগাস্টে স্বাভাবিকের চেয় বেশি বৃষ্টি ও বন্যা যে হতে পারে, গত মে মাসেই তা ভারতে আবহাওয়াবিদদের এক সম্মেলনে উঠে এসেছিল। সেই সম্মেলনে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রতিনিধিও অংশ নিয়েছিলেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে এসেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর তাদের অগাস্ট মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে ভারি বৃষ্টিপাতজনিত কারণে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্ব পার্বত্য অববাহিকার কিছু জায়গায় স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করেছিল।
গত ২ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অগাস্টের বন্যা আসছে জানিয়ে আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
গত ১৬ অগাস্ট থেকে আবহাওয়া অধিদপ্তর নিয়মিত ভারি বৃষ্টির সতর্কবার্তা জারি করে আসছিল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যে ভারি বৃষ্টির কারণে বন্যা হচ্ছে সেটা হঠাৎ করে শুরু হয়নি। হঠাৎ করে শুরু হলেও এ সময়ে এসে পরবর্তী ১০ দিনের আবহাওয়া পরিস্থিতি কী থাকবে সেটা জানা থাকার কথা। কিন্তু আমাদের প্রস্তুতিটা কী ছিল? আমাদের প্রস্তুতির ঘাটতি ছিল।”
অন্তর্বর্তী সরকার সব নির্বাচিত স্থানীয় প্রতিনিধিদের সরিয়ে দিয়েছে, বন্যার ভয়াবহতার জন্য এই বিয়ষটিকেও দায়ী করেছেন তিনি।
মনিরুজ্জামান খান বলেন, “একটা বড় ধরনের শূন্যতা তৈরি হয়েছে। তাকে ছয় মাস পরেও সরানো যেত। কেউ তো দিন শেষে দায় নিচ্ছে না। সে ভালো হোক, মন্দ হোক এলাকার দায়িত্বটা সেই নেবে।
“এমন সময়ে ঘটনাটা ঘটেছে, প্রশাসনিক জায়গা, স্থানীয় সরকার কোনো কিছুই নাই, তাই সমন্বয় করা যাচ্ছে না। আন্দোলনের সময়ও পুরো সেটআপটাতে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে।”
তার ভাষ্য, একটি পরিবর্তনের ফলে পুরো সিস্টেম আর কাজ করছে না। তাই সময় মত প্রস্তুতিও নেওয়া সম্ভব হয়নি।
“প্রস্তুতি অবশ্যই নিতে পারত, কিন্তু নেবে কে? মাইকিংটা করতেও তাদের দায়িত্ব নিতে হয়।”
জলবায়ু পরিবর্তন ও নদী বিশেষজ্ঞ আইনুন নিশাতও বলছেন, বন্যা মোকাবেলায় বাংলাদেশের প্রস্তুতির ঘাটতি ছিল।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলন, “১৬ অগাস্টের দিকে যখন প্রচণ্ড বৃষ্টি শুরু হয় এবং পূর্ব দিকে বৃষ্টি হচ্ছিল তখন সবার জায়গা থেকে তার দায়িত্ব নেওয়া উচিত ছিল।
“পূর্বাভাসটা ঠিকমত বুঝতে হবে। আবহাওয়া অধিদপ্তর যে পূর্বাভাস দিচ্ছে প্রচণ্ড বৃষ্টি হবে, ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে। তারপরেও কেউ কিছু করেনি, হঠাৎ করে আমরা অবাক হলাম।”
কী প্রস্তুতি নেওয়া যেত?
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক সমরেন্দ্র কর্মকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এবার আবহাওয়ার সতর্কতা মোটামুটি ঠিকই ছিল। তবে বৃষ্টির পরিমাণ যে এত বেশি হবে এবং এ অঞ্চলে হবে এটা কল্পনাতীত ছিল।
“যে কোনো বাধ, ড্যাম ওভারফ্লো করে পানিটা আসছে উপর থেকে। দেশেও ভালো বৃষ্টি হয়েছে।”
ড্যাম এবং বাঁধগুলো পাকাপোক্ত করতে যা করা যায় সে বিষয়ে কাজ করার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, “সব নদী ভরাট হয়ে পানি ধারণক্ষমতা কমে গেছে, পানিটা তো ওভারফ্লো হবেই। ফ্লাড শেল্টার বলতেও নাই কিছু।”
আইনুন নিশাত বলছেন, “বর্ষাকালে যে কোনো সময় বন্যার চাপ আসতে পারে সেটা স্বাভাবিক, ফলে বাঁধগুলো মেরামত করে রাখা যেত।
“স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি আছে, তাদেরকে প্রস্তুতি নিতে বলতে পারত। সেটা জানলে প্রস্তুতি নিতে পারত মানুষ।”
আলোচনায় ভারত
বুধবার বন্যার শুরু থেকেই প্রতিবেশী দেশ ভারতকে এ পরিস্থিতির জন্য দায়ী করা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ভারত ত্রিপুরায় ডাম্বুরে জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের জলকপাট খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশ ভেসে যাচ্ছে অভিযোগ করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভও দেখিয়েছেন।
তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বৃহস্পতিবার বলেছেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি-উজানের পানি বাংলাদেশে ধেয়ে এসে এ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি করছে। কোনো ধরনের আগাম সতর্কতা ও প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ না দিয়ে এ যে বাঁধ খুলে দেওয়া হয়েছে; এটির মাধ্যমে ভারত অমানবিকতার পরিচয় দিয়েছে এবং বাংলাদেশের সাথে অসহযোগিতা করছে।”
আর পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা চৌধুরী শুক্রবার বলেছেন, “প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে যদি চুক্তি নাও থাকে, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী উজানের দেশ হিসেবে ভারতের পানি ছাড়ার আগে আমাদেরকে জানানোর কথা। কিন্তু এবার সেটি প্রতিপালিত হয়নি।
“তবে, এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে অভিন্ন নদীগুলো দিয়ে পানি ছাড়ার আগে যেন বাংলাদেশকে জানানো হয়, এ ব্যাপারে ভারতের কাছে আমাদের বার্তা পৌঁছানো হবে।”
ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে এর প্রতিক্রিয়ায় জানিয়ে বলেছে, ত্রিপুরার ডাম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশে বন্যা হচ্ছে– বিষয়টি ‘তথ্যগতভাবে সঠিক নয়’।
বৃহস্পতিবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও ভারতে গোমতী নদীর সংলগ্ন এলাকায় গত কয়েকদিনে চলতি বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বাঁধের ভাটি এলাকার পানির কারণে বাংলাদেশের বন্যা হয়েছে।
বাংলাদেশ থেকে উজানে ১২০ কিলোমিটার নদীপথে তিনটি পানির পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থাকার কথা বলা হয়েছে বিবৃতিতে। যার মধ্যে অমরপুর স্টেশন থেকে দ্বিপক্ষীয় প্রটোকলের আওতায় বাংলাদেশকে বন্যার হালনাগাদ তথ্য দেওয়া হয়।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে ঢাকায় ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মাও বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন।
পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ভারতীয় দূতের ভাষ্য তুলে ধরে বলেছেন, “ত্রিপুরায় বৃষ্টি হচ্ছে, সেটার কথা হয়েছে। বাঁধের কথা এসেছে, বলেছেন যে অটোমেটিক রিলিজটা হয়েছে। এত পানির উচ্চতা, এত পানি, ফলে এটা থেকে অটোমেটিক রিলিজটা হয়েছে।”
বাঁধ ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ নাকচ করেছেন ত্রিপুরার বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ। তাকে উদ্ধৃত করে বিবিসি বাংলা এক প্রতিবেদনে লিখেছে, “যে প্রচারটা করা হচ্ছে ডাম্বুর গেট খুলে দেওয়া নিয়ে, সেটা অপপ্রচার ছাড়া কিছু না। গোমতী জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কোনো গেট খুলে দেওয়া হয়নি।
“এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জলাধারটির সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ৯৪ মিটার। জলস্তর এর বেশি উঠলে নিজের থেকেই জল গেট দিয়ে বেরিয়ে যাবে। জলস্তর আবার নিচে নেমে গেলে নিজের থেকেই গেট বন্ধ হয়ে যাবে।”
তিনি বলেন, “জলস্তর সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতার বেশি হয়ে যেতেই জলাধারের দুটি গেট দিয়ে জল বেরোচ্ছে। এর মধ্যে একটি গেট দিয়ে ৫০% হারে জল বেরোচ্ছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষকে আগে থেকেই মাইকিং করে সতর্ক থাকার অনুরোধও জানানো হয়েছিল।”
কেবল বাংলাদেশ নয়, গত তিন দশকে এবারের মত ভয়াবহ বন্যা হয়নি ত্রিপুরাতেও। রাজ্যে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২০ জনে দাঁড়িয়েছে। সেখানকার ৮ জেলার আশ্রয়কেন্দ্রে গেছেন প্রায় ৬৫,৫০০ মানুষ।
১৯৯৩ সালের ২১ অগাস্ট ত্রিপুরার সাব্রুমে একদিনে ২৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টির রেকর্ড ছিল। আর এ বছর ২০ অগাস্ট একদিনে বৃষ্টি হয়েছে ৩৭৫.৮ মিলিমিটার। ঠিক ৩১ বছর পরে একদিনে এত বেশি বৃষ্টি হয়েছে।
অগাস্ট মাসের ২১ দিনে স্বাভাবিক বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল ২১৪ মিলিমিটার। সেখানে বৃষ্টিপাত হয়েছে ৫৩৮.৭ মিলিমিটার, যা স্বাভাবিকের থেকে ১৫১ শতাংশ বেশি।
এত বেশি বৃষ্টি ঝরায় স্বভাবতই এত বড় বন্যা দেখা গেছে বলে রাজ্যের মন্ত্রী রতন লালের ভাষ্য।
Discussion about this post