শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারের পতনের পর সরকারি বেসরকারি স্থাপনায় বেশুমার হামলার মধ্যে আক্রান্ত হয়েছে প্রধান বিচারপতির বাসভবনও।
বাধা দেওয়ার লোক ছিল না, হামলাকারীরা যে যার মত করে যা খুশি নিয়ে গেছেন। তবে অন্য অনেক ভবনের মত এখানে আগুন ধরানো হয়নি।
গত ৫ অগাস্টের হামলার পর এই বাড়িটি পুরোপুরি অরক্ষিত পড়ে আছে। সেখানে কড়া পুলিশি নিরাপত্তার যে বিষয়টি একেবারেই স্বাভাবিক ঘটনা, সেটিও এখন নেই।
পুলিশ কার্যত উধাও হয়ে যাওয়ার পর এই ভবনের নিরাপত্তাতেও কেউ নেই। প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকে পড়া যাচ্ছে অবলীলায়।
শুক্রবার রাজধানীর হেয়ার রোডে প্রধান বিচারপতির বাসভবনের প্রধান ফটকে কোনো নিরাপত্তারক্ষীর দেখা মেলেনি। বিনা বাধায় ফটক দিয়ে ঢুকে পড়া গেল ভবনটিতে।
প্রাঙ্গণ জুড়ে বাসভবনের মালামাল ছড়ানো-ছেটানো পড়ে আছে।
ফটকের ফাঁক গলে উঁকি দিতেই এক পথচারী বলে উঠলেন, “কী দেখেন ভাই? কোথাও কেউ নেই।”
সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে মাঠে নামা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সরকার পতনের দাবিতে ডাকা অসহযোগ আন্দোলনের দ্বিতীয় দিন পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর পর বিকেলে মিছিল নিয়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনের ঢুকে পড়ে একদল মানুষ। তারা বাসভবন ভাঙচুরের পাশাপাশি ভবনের বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে যান।
ফটকের ভেতরে একেবারে প্রবেশমুখ থেকে ভেতরে পর্যন্ত ছড়ানো রয়েছে বিভিন্ন মালামাল। দূর থেকেও ভবনে ভাঙচুর চালানোর চিত্র স্পষ্ট।
অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও কথা বলার মতো কাউকেই পাওয়া যায়নি। এর মধ্যে জুমার নামাজ পড়তে যাওয়া বেইলি রোডের এক বাসিন্দা জানান, হামলা চালানোর পর থেকে এখানে কাউকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়নি। এভাবেই পড়ে আছে এই বাসভবন।
ভবনটিতে অতর্কিত হামলার কিছুক্ষণ আগেই প্রধান বিচারপতি বাসভবন থেকে বের হয়ে যান বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে।
সন্ধ্যার পর এই বাসভবনের বিপরীত পাশে বিচারপতিদের আবাসিক ভবন জাজেস কমপ্লেক্সেও হামলার ঘটনা ঘটে। বিপুলসংখ্যক লোক জমায়েত হয়ে বিচারপতিদের উদ্দেশে নানা কটূক্তি করতে থাকে। এদের কেউ কেউ দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে হামলা ও ভাঙচুর চালায়।
পরে বিএনপিপন্থি কিছু আইনজীবী ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা গেটের সামনে অবস্থান নিয়ে হামলা না করতে অনুরোধ করেন।
শিক্ষার্থীরা বলতে থাকেন, ‘বিচারপতিদের বাসভবন আমাদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ, জাতীয় সম্পদ। এখানে হামলা করে আমাদের অর্জন ম্লান করা ঠিক হবে না’।
Discussion about this post