কোনো দল বা গোষ্ঠীর ক্ষমতার আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।
তিনি বলেন, “এই গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে মেরামত করে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ সাধন করার জন্য। গণঅভ্যুত্থানে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব হবে ছাত্র-নাগরিকের আশা-আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন করা। কোনো নির্দিষ্ট দল কিংবা গোষ্ঠীর ক্ষমতার আকাঙ্ক্ষা চরিতার্থ করার জন্য নয়।”
বুধবার বিকালে নিজের ফেইসবুক পেইজে একথা লেখেন আসিফ। পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ পোস্ট দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি।
গত জুলাই মাস থেকে শুরু হওয়া কোটাবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আন্দোলনে ব্যাপক সহিংসতা ও প্রাণহানি হলে তা এক পর্যায়ে সরকার পতনের একদফা আন্দোলনে পরিণত হয়। তুমুল গণআন্দোলনের মুখে সোমবার পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা।
সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের গঠনের ঘোষণা দেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। পরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন দ্বাদশ সংসদ ভেঙে দেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনার জন্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় তিন বাহিনী প্রধান, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানসহ অন্য দলগুলোর প্রতিনিধি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে মঙ্গলবার ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের প্রস্তাবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান করা হয়েছে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে। এই সরকারের শপথ বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে হতে পারে বলে সেনাপ্রধান জানিয়েছেন।
মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ১৫ জন হবেন বলে জানান সেনাপ্রধান। তবে এ সংখ্যা কম-বেশিও হতে পারে। যদিও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে কারা থাকছেন সেটি এখনও জানা যায়নি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকেও একটি তালিকা দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
বুধবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ফেইসবুক পোস্টে লেখেন, “ছাত্র-জনতার প্রস্তাবিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা ও দাবি অনুযায়ী রাষ্ট্র মেরামত না হওয়া পর্যন্ত ছাত্র-জনতা সতর্ক ও সজাগ আছে এবং থাকবে। যেকোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক উস্কানি, জনগণের সম্পত্তির ক্ষতি সাধন ও বিশৃঙ্খলা প্রতিহত করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সংগঠিত আছে ও জনগণের সঙ্গে থেকে কাজ করে যাচ্ছে।
“শান্তি প্রতিষ্ঠায় যুদ্ধ করেছি আমরা, এখন আবার দায়িত্ব নিয়ে সেই যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতিও নিরাময় করছি। ভলান্টারি অ্যাক্টিভিটির মাধ্যমে দেশের দায়িত্ব নেওয়া ছাত্র-জনতাকে স্যালুট জানাই।”
Discussion about this post