নিউজ রুম: এবার অনির্দিষ্টকালের জন্য সারা দেশে কারফিউ জারি করেছে সরকার, যা গতকাল রোববার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে কার্যকর হয়েছে। এ ছাড়া আজ সোমবার থেকে দেশে তিন দিনের (৫, ৬ ও ৭ আগস্ট) সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পৃথকভাবে এই দুটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষিত সরকারের পদত্যাগের দাবি ও অসহযোগ আন্দোলনকে ঘিরে গতকাল ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক সংঘাত-সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এমন পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গতকাল সন্ধ্যা ছয়টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সারা দেশে কারফিউ বলবৎ থাকবে। এ সিদ্ধান্ত ঢাকাসহ সব বিভাগীয় সদর, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, শিল্পাঞ্চল, জেলা ও উপজেলা সদরের জন্য কার্যকর হবে।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবির আন্দোলনকে ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত ১৯ জুলাই রাত ১২টা থেকে সারা দেশে কারফিউ জারি করে সরকার। দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় শিথিল থাকলেও ১৯ জুলাই রাত থেকে কারফিউ বহাল রয়েছে।
কারফিউর কারণে জুলাই মাসে তিন দিন সাধারণ ছুটি ছিল। আর কয়েক দিন সীমিতভাবে সরকারি অফিস চলে। এর মধ্যে গতকাল নির্বাহী আদেশে সোম, মঙ্গল ও বুধবার—তিন দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, নির্বাহী আদেশে দেওয়া ছুটির শর্ত আগের ছুটির মতোই থাকবে।
সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি পরিষেবা, যেমন বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস ও বন্দরগুলোর কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা, টেলিফোন, ইন্টারনেট, ডাকসেবা, হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ-সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীরা এই ছুটির আওতার বাইরে থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, আজ থেকে তিন দিন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া এই সময়ে শেয়ারবাজারে লেনদেন হবে না।
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের সই করা পৃথক বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগ ও অধস্তন আদালত/ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
কারফিউতে দায়িত্ব পালন করবে সেনাবাহিনী
সরকারের জারি করা কারফিউতে সংবিধান ও আইনের আলোকে দায়িত্ব পালন করবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। গতকাল আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জনগণের জানমাল ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিতে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সেনাবাহিনী বাংলাদেশের সংবিধান ও দেশের প্রচলিত আইনের আলোকে তার প্রতিশ্রুত দায়িত্ব পালন করবে। এ ব্যাপারে জনসাধারণকে কারফিউ মেনে চলার পাশাপাশি সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।
Discussion about this post